অবিশ্বাস্য এক টি-২০ ম্যাচ, ছক্কা ৩৬টি ও ৫০১ রান

স্টাফ রিপোর্টার

টি-টোয়েন্টি ম্যাচের দুই দলের ৪০ ওভার মিলে সর্বোচ্চ কত রান হতে পারে? ৪০০, ৪২০? কিংবা ৪৫০? দক্ষিণ আফ্রিকা টি-টোয়েন্টি চ্যালেঞ্জে এক ম্যাচে যে পরিমাণ রান উঠেছে, তা রীতিমত অবিশ্বাস্য, বিস্ময়কর। এক ম্যাচেই রান উঠেছে ৫০০ প্লাস।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ডামাঢোলের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হওয়া এই অবিশ্বাস্য ম্যাচটির প্রতি হয়তো খু্ব একটা নজর পড়েনি কারও। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর, ২০২২) দক্ষিণ আফ্রিকার পচেফস্ট্রমে টাইটান্স এবং নাইটসের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে অতিমানবীয় ম্যাচটি। যেটিতে দুই দল মিলে স্কোরবোর্ডে তুলেছে ৫০১ রান।

টাইটান্স এই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে সংগ্রহ করেছে ২৭১ রান। জবাব দিতে নেমে নাইটস খেলেছে ২৩০ রানের ইনিংস। ২৭১ রান করেও টাইটান্স জিতেছে কেবল ৪১ রানে।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসে ৫০১ রান এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগে টি-টোয়েন্টিতে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ রান হয়েছিল ২০১৬ সালে নিউজিল্যান্ডের সুপার স্ম্যাশ লিগে সেন্ট্রাল ডিস্ট্রিক্ট এবং ওটাগোর ম্যাচে। ওই ম্যাচে হয়েছিল সর্বোচ্চ ৪৯৭ রান।

টাইটান্সের ২৭১ রান করার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান ছিল ডেওয়াল্ড ব্রেভিসের। ৫৭ বলে ১৬২ রানের এক টর্নেডো ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ১৩টি বাউন্ডারির সঙ্গে ছক্কার মার মেরেছেন তিনি ১৩টি।

টি-টোয়েন্টিতে কোনো দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটারের এটা সর্বোচ্চ স্কোরের রেকর্ড। তবে, ব্রেভিসের এই ইনিংস কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ নয়। এ জায়গায় সবার ওপর বসে রয়েছেন ক্রিস গেইল। রয়্যালস চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুর হয়ে ২০১৩ সালে আইপিএলে অপরাজিত ১৭৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।

এছাড়া ২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার অ্যারোন ফিঞ্চ খেলেছিলেন ১৭২ রানের ইনিংস। জিম্বাবুয়ের হযরতউল্লাহ জাজাইও খেলেছিলেন ১৬২ রানের ইনিংস। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেরাদুনে এই ইনিংস খেলেন তিনি।

তবে ব্রেভিস একটা রেকর্ড গড়েছেন তার এই ইনিংস খেলার পথে। ১৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছাতে তিনি খেলেন ৫২ বল। দ্রুততম ১৫০ রানের মাইলফলকে পৌঁছার আগের রেকর্ডটি ছিল ৫৩ বলে, ক্রিস গেইলের ১৭৫ রানের ইনিংসটি খেলার পথে।

সেঞ্চুরি করতে ব্রেভিস খেলেছিলেন ৩৫ বল। যা টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে ৫ম সেরা। সবচেয়ে কম বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড ক্রিস গেইলের। ৩০ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। ব্রেভিসসহ ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড রয়েছে আবার ৬ জনের।

১৬২ রান করতে ব্রেভিস খেলেন মোট ১৩টি ছক্কা। সবচেয়ে বড় কথা ৫০১ রানের এই ম্যাচে মোট ছক্কা মারা হয়েছে ৩৬টি। এর মধ্যে টাইটান্সের ব্যাটাররা ১৭টি এবং নাইটসের ব্যাটাররা মেরেছে ১৯টি ছক্কা। দু’দল মিলে মোট বাউন্ডারি মেরেছে মোট ৩৩টি।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকায় মঙ্গলবার টাইটান্সের করা ২৭১ রান কিন্তু কোনো এক দলের সর্বোচ্চ ইনিংস নয়। এটা রয়েছে চতুর্থ স্থানে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর করেছিল আফগানিস্তান। তারা সেদিন খেলেছিল ৩ উইকেটে ২৭৮ রানের ইনিংস।

৪ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান করেছিল ইউরোপের আনকোরা দেশ চেক রিপাবলিকও। ২০১৯ সালের আগস্টে তুরস্কের বিপক্ষে ২৭৮ রানের এই বিশাল ইনিংসটি খেলেছিল চেকের ব্যাটাররা।

এছাড়া চলতি বছর তথা ২০২২ সালের জানুয়ারিতে বিগ ব্যাশে হোবার্ট হ্যারিকেনের বিপক্ষে ২ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান করেছিল মেলবোর্ন স্টারস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *