রাশিয়াকে ৪০ টারবাইন দেওয়ার ঘোষণা ইরানের

স্টাফ রিপোর্টার

গ্যাসশিল্পে সহায়তা করতে রাশিয়ায় ৪০টি টারবাইন সরবরাহ করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। গতকাল রোববার ইরান এ ঘোষণা দিয়েছে। এএফপির খবর বলছে, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘোষণা দিল ইরান।

ইরানের গ্যাস ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা নৌশাদি বলেছেন, ইরানের শিল্পসংক্রান্ত সফলতা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোনে সীমাবদ্ধ নয়।

ইরানের তেলবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সংস্থা শানার বরাতে এএফপি বলেছে, নৌশাদি আরও বলেছেন, গ্যাসশিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা ও সরঞ্জামগুলোর ৮৫ শতাংশ ইরানের ভেতরে নির্মিত হয়। ইরান এ সক্ষমতার ভিত্তিতে তাদের তৈরি ৪০টি টারবাইন রাশিয়ায় রপ্তানি করতে চুক্তিতে সই করেছে।

তবে কোথায় এ চুক্তি সই হয়েছে ও কখন টারবাইনগুলো সরবরাহ করা হবে, তা স্পষ্ট করেননি নৌশাদি। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের কারণে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় রাশিয়া ইউরোপের বিভিন্ন দেশে গ্যাস সরবরাহ কমিয়েছে ও স্থগিত করেছে।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রেমলিন বলেছে, নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়া গ্যাস অবকাঠামো যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারছে না। কানাডায় সিমেন্স টারবাইন মেরামতের জন্য দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি ফেরত আনা যাচ্ছে না।

গত সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভ্লাদিভোসতক ফোরামে বলেছেন, ‘আমাদের টারবাইন দিন। আমরা আগামীকাল থেকেই নর্ড স্ট্রিম লাইন চালু করব।’ রাশিয়া ও জার্মানির মধ্যে গ্যাস সরবরাহের প্রধান লাইন হচ্ছে নর্ড স্ট্রিম।

রাশিয়া গ্যাসকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ তুলেছে পশ্চিমা দেশগুলো। নৌশাদি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গ্যাসের বাজার থেকে মস্কোকে বের করে দিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

নৌশাদি আরও বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্র এলএনজি উৎপাদন কারখানা বড় পরিসরে স্থাপন করেছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা ও নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইনে বিস্ফোরণের কারণে গ্যাসের অন্যতম বড় রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া চাপে পড়েছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় গ্যাসের মজুত রয়েছে ইরান ও রাশিয়ায়। দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া ও ইরান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বাড়াতে জোর দিয়েছে।গত জুলাই মাসে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তেহরান সফর করেছেন। সেখানে তিনি ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ও ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা আলী খামেনির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ওই বৈঠকে রাশিয়া ও ইরান দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা জোরদার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন।

কিয়েভ ও পশ্চিমা দেশগুলো অভিযোগ তুলেছে, যুদ্ধে ইরানের তৈরি ড্রোন ব্যবহার করছে রাশিয়া। তবে তেহরান সম্প্রতি যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য রাশিয়াকে কোনো অস্ত্র সরবরাহের কথা অস্বীকার করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *