অর্থ আত্মসাৎ মামলায় আইনজীবী সুমনের জামিন

স্টাফ রিপোর্টার

মামলায় খালাসের কথা বলে দুই ম্যাজিস্ট্রেটের নাম ভাঙিয়ে আসামির কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার আইনজীবী মো. জুয়েল মুন্সি সুমনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।

রোববার (১৬ অক্টোবর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। অন্যদিকে তার আইনজীবী জামিনের আবেদন করেন। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে জামিন শুনানির জন্য রোববার দিন ধার্য করেছিলেন।

তারও আগে বুধবার (১২ অক্টোবর) দুপুরে অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে আইনজীবী জুয়েল মুন্সি সুমনকে আটক করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কোতোয়ালি থানায় পাঠানো হয়। মামলাটির বাদী ভুক্তভোগী আবিরুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মো. আবিরুল ইসলাম চৌধুরী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঢাকার সিএমএম আদালতে তার স্ত্রী যৌতুকের মামলা করেন। মামলার পরে গত ২৮ আগস্ট আসামি আবিরুল ইসলামকে আইনজীবী পরিচয়ে ফোন দেন জুয়েল মুন্সি। ফোনে তিনি বলেন, আপনিসহ (আসামি) পরিবারের আরও তিনজনের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করা হয়েছে। মামলায় তিনজনকে বাদ দেওয়া যাবে, এজন্য জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে।

সে কথা অনুযায়ী বনানীর একটি হোটেলে আবিরুল ইসলামের কাছ থেকে নগদ এক লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন আইনজীবী জুয়েল মুন্সি ও মামলা থেকে বাদ দেওয়া ম্যাজিস্ট্রেটের কাগজ সরবরাহ করেন। পরে ৩০ আগস্ট মামলার দরখাস্তের খরচ বাবদ আসামির কাছ থেকে আরও ১৫ হাজার টাকা নেন জুয়েল মুন্সি।

এরপর গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালত থেকে জামিন করানো ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে (সিএমএম) ম্যানেজ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে মামলাটি স্থায়ী জামিন করানোর কথা বলে আরও তিন লাখ টাকা নেন ওই আইনজীবী। এছাড়া মামলা নিষ্পত্তির পরে আরও এক লাখ ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে বলে জানান।

গতকাল ১২ অক্টোবর মামলাটি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জ শুনানির দিন ছিল। এদিন শুনানির জন্য ২০ হাজার টাকা আসামির কাছ থেকে নেন আইনজীবী। এভাবে জুয়েল মুন্সি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলাম ও শফি উদ্দিনকে টাকা দিতে হবে বলে মোট চার লাখ ৬৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

এ ঘটনায় আবিরুল ইসলাম সিএমএম আদালতে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিন তাকে আটকের আদেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *