ওষুধ কোম্পানির অর্থে কক্সবাজারে ৩০ চিকিৎসক, রোগীদের হাহাকার
যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, আবাসিক মেডিকেল অফিসারসহ ৩০ জন চিকিৎসক বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে সস্ত্রীক কক্সবাজারে যাওয়ায় তিনদিন ধরে কোনো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নেই। বিপাকে পড়েছেন হাজারো রোগী। এভাবে চিকিৎসকদের একযোগে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অন্য চিকিৎসকরা। অভিযোগ রয়েছে বৈজ্ঞানিক সম্মেলনের নামে ওষুধ কোম্পানির অর্থে এসব চিকিৎসক কক্সবাজারে প্রমোদভ্রমণে গিয়েছেন।
হাসপাতালের একাধিক সূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামানকে প্রধান উপদেষ্টা ও চক্ষুবিশেষজ্ঞ ডা. হিমাদ্রি শেখরকে সভাপতি করে চিকিৎসক সার্জনস ওয়েলফেয়ার নামে একটি সংগঠন করা হয়েছে। একমাত্র ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়া দেশের অন্য কোনো হাসপাতালে এ সংগঠনের কার্যক্রম নেই। সদ্যগঠিত এ সংগঠনের ব্যানারে হাসপাতালের অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও জুনিয়র কনসালট্যান্টরা গিয়েছেন বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে। গত রোববার হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. আক্তারুজ্জামান ইএনটি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. রাশেদ আলী মোড়লের কাছে দায়িত্ব দিয়ে ৩০ জন চিকিৎসককে নিয়ে বেরিয়ে যান।
যশোর জেনারেল হাসপাতালে প্রতিদিন সাড়ে ৫০০ রোগী থাকেন বিভিন্ন ওয়ার্ডে। বহির্বিভাগে চিকিত্সা নেন প্রায় ২ হাজার রোগী। যশোর ছাড়া নড়াইল, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার রোগীরা এখানে আসেন চিকিৎসা নিতে। গতকাল হাসপাতাল ঘুরে দেখা গিয়েছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেয়ার ফাঁকা। পাশের আরেক চেয়ারে বসে প্রশিক্ষণার্থী (ইন্টার্ন) চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। গত তিনদিন চিকিত্সা না পেয়ে বহির্বিভাগ ও ভর্তীকৃত রোগীরা হাসপাতাল ছেড়ে যান। ভর্তীকৃত রোগীদের হাসপাতালের ছাড়পত্র খাতায় পলাতক দেখানো হয়েছে। এতে রোগী ও স্বজন চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামান জানান, চিকিৎসক সার্জনস ওয়েলফেয়ারের বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে যোগ দিতে আমরা কক্সবাজার এসেছি। আজ ফিরে আসব। আমাদের আসার বিষয়টি খুলনার স্বাস্থ্য পরিচালক জানেন।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মঞ্জুর মোর্শেদের সঙ্গে সেলফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক তাকে জানিয়েছিলেন কক্সবাজার যাবেন। তবে এত ডাক্তার একসঙ্গে বাইরে যাবেন এটি তার জানা নেই।