স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিজিএমইএর সঙ্গে কাজ করবে ৩ প্রতিষ্ঠান
দেশের তৈরি পোশাক খাতের কর্মীদের সুস্থতা নিশ্চিতে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ), ইন্টেগ্রাল গ্লোবাল (আইজি) ও আয়াত এডুকেশন।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিজিএমইএ ভবনে প্রতিষ্ঠান তিনটির প্রধানদের উপস্থিতিতে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান, আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান ও আইজির পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা নাবিল আহমেদ।
আয়াত এডুকেশন মূলত একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান যার প্রধান লক্ষ্য দেশের যুবসমাজ ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি সাধন করা।
সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী, গার্মেন্টস কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষাকে আরও শক্তিশালীকরণ ও তাদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে বিজিএমইএ, আইজি ও আয়াত এডুকেশন। একই সঙ্গে বিভিন্ন কারখানা ও সেখানকার জনগোষ্ঠীর শ্বাসতন্ত্রের সমস্যাজনিত ও কোভিড-১৯ এর ঝুকি কমাতেও যৌথভাবে কাজ করবে এই তিনটি সংগঠন।
পোশাক খাতের প্রায় ৯৫ ভাগ শ্রমিক এখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছে, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে ৬৫ ভাগ এবং তৃতীয় ডোজ প্রক্রিয়া চলমান। এটা চলমান থাকায় গার্মেন্টস কর্মীরা স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি খুব কঠোরভাবে পরিপালন করে আসছে। তবে এসব কর্মীদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর মারাত্মকতার ব্যাপারে কোনো তথ্য লিপিবদ্ধ পাওয়া যায়নি।
সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে আয়াত এডুকেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান বলেন, দেশে তৈরি পোশাক খাতে উন্নতির ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে অনেক সময় গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকদের সঠিক স্বাস্থ্য-সুরক্ষা দিতে গিয়ে অনেক সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের এই যৌথ উদ্যোগ পোশাক শ্রমিকদের সুস্থতার প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে। এটা শুধুমাত্র তাদের শারীরিক সুস্থতাকেই গুরুত্ব দেবে না, তাদের কাজের উৎপাদনশীলতাও আরও বহুগুণে বৃদ্ধি করবে।
দেশে বর্তমানে ৪ হাজার ৬০০টি কারখানায় মোট ৪ মিলিয়ন কর্মী (যাদের মধ্যে ৭০ ভাগ নারী) কাজ করছে। সুতরাং গার্মেন্টস কারখানাগুলোর কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে তাদের কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতিসাধন, শিল্প-কারখানার টেকসই উন্নতি নিশ্চিতকরণ এবং মহামারি ও অপ্রত্যাশিত স্বাস্থ্য বিপর্যয় মোকাবিলায় কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতাকে শক্তিশালীকরণ ও এ ব্যাপারে তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আমাদের এই অংশীদারত্বমূলক সহযোগিতা চুক্তির মাধ্যমে কর্মীদের উৎপাদনশীলতার উন্নতি ঘটাবে এবং আমাদের কর্মীদের উন্নতির নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধির অনুশীলনে সহযোগিতা করবে।
আইজি’র পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা নাবিল আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রভাব ছিল ব্যাপক। ২০২০ ও ২০২১ সাল ছিল পুরো বিশ্বের জন্য খুবই চ্যালেঞ্জিং। কোম্পানিগুলো বাধ্য হয়েছে তাদের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে ও কর্মীদের ছেড়ে দিতে এবং উভয় পক্ষের মধ্যকার অসহায়ত্ব ছিল অগাধ। কর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এই অংশীদারত্বমূলক সমঝোতায় তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টিকে আমরা সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দিয়েছি যাতে করে ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের স্বাস্থ্য বিপর্যয় থেকে আমরা তাদের নিরাপদ রাখতে পারি।
প্রাথমিকভাবে ইন্টেগ্রাল গ্লোবালের সহযোগিতায় আয়াত এডুকেশন বাংলাদেশের গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল মিলগুলোতে দ্রুত কোভিড ছড়িয়ে পড়ারোধে প্রাথমিক পর্যায়টি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে। যার ফলে রেডিমেড গার্মেন্টস সেক্টরের কর্মীদের ভ্যাকসিন কর্মসূচি ৭৭ ভাগ এ এবং সহযোগী কারখানাগুলোর প্রতিরক্ষামূলক কার্যক্রম ৮৫ ভাগ এ উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। যা নিশ্চিতভাবেই কারখানাগুলোকে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হওয়া থেকে নিরাপদ রেখেছে এবং সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ দ্রুত হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে।