যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিঘ্নিত চেক নিষ্পত্তি কার্যক্রম
অ্যাপসের ত্রুটির কারণে গত রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) বা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থায় বিঘ্ন ঘটে। এতে সেদিন কয়েক ঘণ্টা নিকাশব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। পরে ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, সাময়িক সমস্যা তৈরি হওয়ায় কম অংক ও বেশি অংকের চেকের অর্থ নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। রোববার বিকেল পর্যন্ত অনেক চেক নিষ্পত্তি হয়নি। জমা হওয়া সেসব চেকের লেনদেন নিষ্পত্তি সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চেক নিষ্পত্তিতে সমস্যা দেখা গিয়েছিল। দুপুরের পর থেকে সমস্যার সমাধান হয়। তবে একই সময়ে বেশি চেক জমা পড়ায় নিষ্পত্তি করতে পরদিন সোমবার পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এখন সব ঠিকঠাক চলছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্ভারে ত্রুটি থাকায় শুধু শেষ বেলায় পাঁচটা চেকের নিষ্পত্তি হয়েছে। গতকাল সোমবার সার্ভার সমস্যা না থাকলেও আগের দিনের জমে যাওয়া চেক নিষ্পত্তিতে ধীরগতি ছিল। এখন চেক নিষ্পত্তি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
জানা যায়, রোববার কয়েক ঘণ্টা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। দুপুরের পর সেটি চালু হলেও সব চেক নিষ্পত্তি সম্পন্ন হয়নি। সাধারণত বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) বা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থায় সকালে এক ব্যাংকে অন্য ব্যাংকের চেক জমা দিলে, বিকেলে সেই টাকা গ্রাহকের হিসাবে জমা হয়। সে অর্থ গ্রাহক নিজের প্রয়োজনে লেনদেন করতে পারেন। তবে রোববার এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের চেক নিলেও গ্রাহকের হিসাবে টাকা জমা হয়নি। জমা হয় পরদিন সোমবার।
পাঁচ লাখ টাকার বেশি অংকের চেক নিষ্পত্তির জন্য বেলা ১১টার মধ্যে অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস বা বিএসিএইচে পাঠাতে হয়। এসব চেক দুপুর আড়াইটার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। নিয়মিত চেক বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে নিষ্পত্তির জন্য পাঠানো হলেও তা বিকেল ৪টার মধ্যে তা নিষ্পত্তি হয়।
গত জুন মাসে হাই ভ্যালু চেক নিষ্পত্তি হয় ২ লাখ ৬১ হাজার ১৫০টি। এসব চেকের অর্থের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮১ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা। একই মাসে রেগুলার ভ্যালু চেক নিষ্পত্তি হয় ২০ লাখ ৩৫ হাজার ২৯৫টি। এ চেকের অর্থের পরিমাণ ছিল ৯৮ হাজার ১০৩ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ অটোমেটেড ক্লিয়ারিং হাউস (বিএসিএইচ) বা স্বয়ংক্রিয় নিকাশব্যবস্থায় দুই ধরনের আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়। এর একটি হলো- বাংলাদেশ অটোমেটেড চেক প্রসেসিং সিস্টেম। এটির মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ক্লিয়ারিং কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। আর বাংলাদেশ ইলেকট্রনিক ফান্ডস ট্রান্সফার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের আন্তঃব্যাংক লেনদেন নিষ্পত্তি হয়।