দিনের পর দিন সাগরে ভেসে সিসিলিতে ৪১ বাংলাদেশি
লিবিয়ার বেনগাজি উপকূল থেকে যাত্রা করে ছয় দিন পর দক্ষিণ ইতালির সিসিলিতে পৌঁছেছেন ৪১ বাংলাদেশি। আট মিটার লম্বা একটি নৌকায় লিবিয়া উপকূল থেকে তারা যাত্রা করেছিলেন।
১৩ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার বেনগাজি উপকূল থেকে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় যাত্রা করা ৪১ জন বাংলাদেশি রোববার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাত আনুমানিক সাড়ে ১২টার দিকে দক্ষিণ ইতালির সিসিলির ক্যাপো পাসেরোর পোর্টোপালো বন্দরে এসে পৌঁছান।
নৌকায় থাকা বেশ কয়েকজন অভিবাসী ইনফোমাইগ্রেন্টসকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর একটি আট মিটার লম্বা নৌকায় বাংলাদেশি অভিবাসীরা যাত্রা শুরু করেন। তাদের সঙ্গে প্রায় এক হাজার লিটার তেল থাকায় সাগরে জ্বালানি সংকট হয়নি।
তবে, ইতালি উপকূলে পৌঁছানোর আগে অভিবাসীরা সমুদ্রে অনেকগুলো বাণিজ্যিক ও বেসরকারি জাহাজের কাছে উদ্ধারের অনুরোধ করলেও তারা কেউ সাড়া দেয়নি।
বেনগাজি উপকূল থেকে যাত্রার পাঁচদিন পার হলেও ইন্টারনেন্ট সংযোগ না থাকায় তাদের কোন সংবাদ পাচ্ছিলেন না পরিবারের সদস্যরা। তাদের কেউ কেউ উদ্বিগ্ন হয়ে ইনফোমাইগ্রেন্টসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
উদ্ধারের পর অভিবাসীরা জানান, সমুদ্রে কোনো জাহাজ তাদের উদ্ধার না করায় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক দীর্ঘ সময় তারা মাঝ সমুদ্রে ভাসছিলেন।
যাত্রার এক পর্যায়ে তারা ইতালির সিসিলি উপকূলের কাছে পৌঁছালে ইতালির কোস্টগার্ডের একটি টহল বিমান নৌকার অবস্থান শনাক্ত করে। এরপর ৪১ অভিবাসীকে উদ্ধার করে স্থানীয় ক্যাপো পাসেরোর পোর্টোপালো বন্দরে নিয়ে আসে।
অভিবাসীরা আরও জানান, পুরো যাত্রার সময় তাদের কাছে কোনো লাইফ জ্যাকেট ছিল না। সেক্ষেত্রে নৌকা ডুবে গেলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা ছিল। তবে পর্যাপ্ত তেল থাকায় তারা অপেক্ষাকৃত কম সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানান।
সম্প্রতি লিবিয়ার ত্রিপোলি এবং জওয়ারা উপকূল ছাড়াও বেনগাজি উপকূল থেকে বেড়েছে বাংলাদেশি অভিবাসীদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার ঘটনা। তাদের বড় একটি অংশ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ ও সিরিয়া হয়ে পাচারকারীদের মাধ্যমে লিবিয়ার বেনগাজিতে আসেন।
সূত্র: মোহাম্মদ আরিফ উল্লাহ/ইনফোমাইগ্রেন্টস