টানবাজারে কমতে শুরু করেছে সুতার দাম
দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার নারায়ণগঞ্জ টানবাজারে নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে সুতার দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় সব কাউন্টের সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৮-১০ টাকা কমেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সুতা তৈরির কাঁচামাল তুলার দাম কমেছে। ফলে সুতার দামও কিছুটা কমতির দিকে। এদিকে বাজারে বেচাকেনায় মন্দা চলছে বলেও জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। পোশাক শিল্পে বৈদেশিক ক্রেতাদের পক্ষ থেকে ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় সুতার চাহিদা কম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে ১০ কাউন্টের সুতা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৪৫-৯১ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫০-১০৫ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে প্রায় ৮-১০ টাকা।
২০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ৯১-১০২ টাকা দরে, যা ৮-১০ দিন আগেও ছিল ৯২-১০৫ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ২-৩ টাকা পর্যন্ত।
এক্সপোর্ট কোয়ালিটির ২৪, ২৬ ও ৩০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ১৫৮-১৭১ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৬৬-১৭৫ টাকা দরে। সে হিসাবে পাউন্ডপ্রতি দাম কমেছে ৮ টাকা।
৪০ কাউন্টের (টানা) সুতা বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ১৭০-১৮৫ টাকা দরে, যা ১০ দিন আগেও ছিল ১৮০-১৯৫ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ১০ টাকা।
৫০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে প্রকারভেদে ১৮২-২১৫ টাকা দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯০-২২৫ টাকা। সে হিসাবে দাম কমেছে ৮-১০ টাকা।
৬০ কাউন্টের সুতা বাজারে বেচাকেনা হচ্ছে পাউন্ডপ্রতি প্রকারভেদে ২০০-২৩৫ টাকা, যা ১০-১৫ দিন আগেও ছিল ২১০-২৪৫ টাকা দরে। সে হিসাবে দাম দাম কমেছে ১০-১২ টাকা।
৮০ কাউন্টের সুতা বেচাকেনা হচ্ছে ৩৪৫-৩৬০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ৩৬০-৩৬৫ টাকা দরে। সে হিসাবে দাম কমেছে পাউন্ডপ্রতি ১৫ টাকা।
নারায়ণগঞ্জ ইয়ার্ন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশেনের সভাপতি লিটন সাহা জানান, ৮-১০ দিনের ব্যবধানে সব ধরনের সুতার দাম পাউন্ডপ্রতি ৮-১০ টাকা কমেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম কমতির দিকে থাকায় স্পিনিং মিলগুলো সুতার দাম কিছুটা কমিয়েছে। তবে বাজারে বেচাকেনায় বেশ মন্দা দেখা দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে বিদেশী বায়ারদের অর্ডার কমে গিয়েছে। অন্যদিকে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় সুতার দাম তিন-চার গুণের বেশি বেড়ে যাওয়ায় অনেক তাঁতি ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন। কেউ কেউ ব্যবসার পরিসর কমিয়ে এনেছেন। এসবের প্রভাব সুতার বাজারে পড়েছে।
বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেন জানান, বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মন্দা এবং দেশের বাজারে ডলারের বিনিময় মূল্য বৃদ্ধির কারণে বাজারে অস্থিরতা চলছে। এর প্রভাব সুতার বাজারেও পড়েছে।
সুতা ব্যবসায়ী আব্দল লতিফ জানান, সাম্প্রতিক মাসগুলোয় সুতার দাম যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে কাপড় কিংবা পোশাক উৎপাদন বা পোশাকের দাম বাড়েনি। এজন্য সরকারের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানান তিনি।