৩৮ বিলিয়নের নিচে নামছে রিজার্ভ

স্টাফ রিপোর্টার

বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী উদ্যোগের ফলে দেশে আমদানি ব্যয় কমেছে। তবে ডলার বিক্রি ও এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিটের (আকু) দেনা পরিশোধের ফলে বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়ন বা রিজার্ভের ওপর চাপ না কমে উল্টো আরও বাড়ছে। দু-এক দিনের মধ্যেই রিজার্ভ ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা। গত সপ্তাহের শেষ দিন বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩৯ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার।

এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের জুলাই-আগস্ট মেয়াদের আমদানির বিল এসেছে ১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার। রবিবার অথবা সোমবার এই দেনা পরিশোধ করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। হিসেব বলছে, তখন রিজার্ভ কমে ৩৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে ৩৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে।

অর্থনীতির সূচকগুলোতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। ডলারের বাজারে ‘স্থিতিশীলতা’ আনতে গত অর্থবছরের ধারাবাহিকতায় রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেই চলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বৃহস্পতিবারও কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বিক্রি করা হয়েছে।

সব মিলিয়ে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের দুই মাস এক দিনে (১ জুলাই থেকে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) রিজার্ভ থেকে ২৫৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

মুদ্রাবাজার স্বাভাবিক রাখতে ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২২ অর্থবছরে রিজার্ভ থেকে ৭৬৭ কোটি (৭.৬৭ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনই রিজার্ভ থেকে এক অর্থবছরে এত ডলার বিক্রি করা হয়নি। তার আগের অর্থবছরে (২০২০-২১) বাজারে ডলারের সরবরাহ বাড়ায় দর ধরে রাখতে রেকর্ড প্রায় ৮ বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত ১২ জুলাই আকু মে-জুন মেয়াদের ১ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৪০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। এরপর ২০ জুলাই পর্যন্ত রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৮০ থেকে ৪০ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে ওঠানামা করে। জুলাইয়ের শেষে তা কমে ৩৯ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে।

রেমিট্যান্স বাড়ায় জুলাইয়ের শেষের দিকে রিজার্ভ বেড়ে ৩৯ দশমিক ৭০ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। ডলার বিক্রির কারণে তা ফের নি¤œমুখী হয়। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গত বছরের আগস্টে রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের যে মাইলফলক অতিক্রম করেছিল, তাতে বাজার থেকে ডলার কেনার অবদান ছিল বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

করোনা মহামারীর কারণে ২০২০-২১ অর্থবছরজুড়ে আমদানি বেশ কমে গিয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ে উল্লম্ফন দেখা যায়। সে কারণে বাজারে ডলারের সরবরাহ বেড়ে যায়। সে পরিস্থিতিতে ডলারের দর ধরে রাখতে ওই অর্থবছরে প্রায় ৮ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *