কমতে পারে ভারতের চিনি রফতানি

স্টাফ রিপোর্টার

২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমে ভারতের চিনি রফতানি ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রফতানির পরিমাণ দাঁড়াবে ৮০ লাখ টনে। মৌসুমে প্রথম দিকের মজুদে নিম্নমুখিতা এবং আখ থেকে ইথানল উৎপাদন বৃদ্ধি রফতানিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে। দেশটির খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরুর পর মূল্যনির্ধারণ প্রক্রিয়া শুরু হবে। উন্মুক্ত ছাড়পত্র নাকি কোটার আওতায় রফতানির অনুমতি দেয়া হবে তা জানা যাবে এসব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর।

ভারতে চিনির বিপণন মৌসুম অক্টোবরে শুরু হয়ে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। আখ মাড়াই কার্যক্রম অক্টোবরে শুরু হয়ে আগামী বছরের নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। চলতি মৌসুমে ভারত ১ কোটি ১২ লাখ টন চিনি রফতানি করবে।

২০২২-২৩ মৌসুমে ভারতে চিনি উৎপাদনও কমার পূর্বাভাস মিলেছে। মিলগুলো এ সময় চিনির পরিবর্তে জৈব জ্বালানি ইথানল উৎপাদন বাড়াবে। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশন (ইসমা) এক বিবৃতিতে উৎপাদন কমার পূর্বাভাস দিয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের বাজারে অস্থিতিশীলতার কারণে ইথানল উৎপাদন লাভজনক বলে মনে করছেন মিল মালিকরা। এছাড়া তুলনামূলক কম দূষণযোগ্য হওয়ায় জ্বালানিটির চাহিদা বেশি। এ কারণেই আখ থেকে চিনির পরিবর্তে ইথানল উৎপাদনের প্রবণতা বেশি।

ইসমার বিবৃতিতে বলা হয়, এ মৌসুমে ভারতের চিনির উৎপাদন ১ দশমিক ৪ শতাংশ কমবে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ কোটি ৫৫ লাখ টনে। চলতি মৌসুমে প্রাক্কলিত উৎপাদন ধরা হয়েছে ৩ কোটি ৬০ লাখ টন।

ইসমা জানায়, আসন্ন মৌসুমে ৪৫ লাখ টন আখ চিনির পরিবর্তে ইথানল উৎপাদনে ব্যবহার করা হবে। চলতি মৌসুমে যার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩৪ লাখ টন।

ভারত বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চিনি উৎপাদক ও ব্যবহারকারী। ২৪ মে দেশটির সরকার চিনি রফতানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। ছয় বছরের মধ্যে প্রথম পণ্যটির রফতানি বিধিনিষেধের মুখে পড়ল। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে এক মৌসুমে এক কোটি টনের বেশি চিনি রফতানি করা যাবে না।

এছাড়া ১ জুন থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যেকোনো রফতানির ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন বা রফতানি ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে রফতানিকারকদের।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বিধিনিষেধ আরোপের আগ পর্যন্ত তালিকাভুক্ত কার্গোর মাধ্যমে ভারতের চিনিকলগুলো ৮৫ লাখ টন চিনি রফতানি করেছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিশ্ববাজারে চিনির দাম বর্তমানে বেশ লাভজনক। ঊর্ধ্বমুখী আন্তর্জাতিক বাজারদরের সুবিধা নিতে চান ভারতের মিল মালিকরা। এক গ্লোবাল ট্রেডিং হাউজের মুম্বাইভিত্তিক ডিলার বলেন, বর্তমানে চিনির আন্তর্জাতিক বাজারদর রফতানিকারকদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাশাপাশি বাজারে ভারতীয় চিনির বেশ ভালো চাহিদা রয়েছে। ভারত খুব সহজেই এক কোটি টন চিনি রফতানি করতে পারবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *