তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন বাড়বে

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছরের আগস্টে শুরু হতে যাচ্ছে তুলার নতুন বৈশ্বিক উৎপাদন মৌসুম। আগামী বছরের জুলাইয়ে এ মৌসুম শেষ হবে। এ মৌসুমে বৈশ্বিক উৎপাদন ৩ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে পণ্যটির ব্যবহার ও বাণিজ্য অপরিবর্তিত বা স্বল্পমাত্রায় বাড়তে পারে। সম্প্রতি মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তুলা ব্যবহারকারী দেশ। ২০২২-২৩ মৌসুমে এসব দেশে পণ্যটির ব্যবহার লক্ষণীয় মাত্রায় কমবে। এটি বৈশ্বিক ব্যবহারের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ওয়ার্ল্ড মার্কেটস অ্যান্ড ট্রেড আউটলুক শীর্ষক প্রতিবেদনে ইউএসডিএ জানায়, বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠছে। এ পরিস্থিতিতে নেতিবাচক প্রভাব দেখা দিয়েছে সামষ্টিক অর্থনীতিতে। এতে ভোক্তাদের মাঝে পণ্যের চাহিদা কমছে। বিপরীতে ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠছে পরিষেবা চাহিদা। মূলত এ কারণেই তুলার চাহিদায় নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে ব্যবহার কমে যাওয়ার পেছনে তুলার অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধি, সীমিত সরবরাহ ও ঊর্ধ্বমুখী কনটেইনার ফিকেও দায়ী করা হচ্ছে। ইউএসডিএর প্রাক্কলন বলছে, আসন্ন মৌসুমে তুলার বৈশ্বিক উৎপাদন ১৫ কোটি ৩৭ লাখ বেলে (প্রতি বেলে ১৭০ কেজি) উন্নীত হতে পারে। চলতি মৌসুমের প্রাক্কলিত উৎপাদন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ বেল।

নতুন এ মৌসুমে ভারতে ৩ কোটি ১৩ লাখ ৭০ হাজার বেল তুলার আবাদ করা হবে। সে হিসাবে দেশটিতে উৎপাদন বাড়বে ১২ শতাংশ। অন্যদিকে চীনে আবাদ করা হবে ৩ কোটি ৪৫ লাখ বেল।

এদিকে ২০২২-২৩ মৌসুমে তুলার ব্যবহার ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ৯০ হাজার বেলে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে ইউএসডিএ। জুনে সংস্থাটি ১৫ কোটি ৫৬ লাখ ৫০ হাজার বেল ব্যবহারের পূর্বাভাস দিয়েছিল। অর্থাৎ নতুন পূর্বাভাসে ব্যবহারের পরিমাণ লক্ষণীয় মাত্রায় কমানো হয়েছে। তবে চলতি মৌসুমের চেয়ে সামান্য ব্যবহার বাড়বে। এ মৌসুমে প্রাক্কলিত ব্যবহারের পরিমাণ ১৫ কোটি ৩৪ লাখ ২০ হাজার বেল।

২০২২-২৩ মৌসুমে তুলার বৈশ্বিক আমদানি দাঁড়াতে পারে ৫ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার বেলে। চলতি মৌসুমে প্রাক্কলিত আমদানির পরিমাণ ৫ কোটি ৫৪ লাখ ৮০ হাজার বেল। তবে জুনে করা প্রাক্কলনের তুলনায় আমদানির পরিমাণ কমানো হয়েছে। ওই মাসে ৬ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার বেল তুলা আমদানির কথা বলা হয়েছিল।

ইউএসডিএর প্রাক্কলন অনুযায়ী, ২০২২-২৩ মৌসুম শেষে তুলার বৈশ্বিক মজুদ দাঁড়াবে ১০ কোটি ৭৯ লাখ বেলে। চলতি মৌসুমে প্রাক্কলিত মজুদের পরিমাণ ১০ কোটি ৭৬ লাখ বেল। তুলাজাত পণ্যের দুর্বল চাহিদার কারণে উৎপাদন বাড়লেও ব্যবহারে ভাটা পড়বে। বাণিজ্যেও শ্লথগতি দেখা দেবে। এ বিষয়গুলোর কারণেই মজুদ বাড়ার পূর্বাভাস দিয়েছে ইউএসডিএ।

ইউএসডিএ বলছে, আবাদে বিলম্ব, ঠিক সময়ে লজিস্টিকস সরবরাহ না থাকাসহ নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে আমদানি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। চলতি মৌসুমেও ভারত, অস্ট্রেলিয়াসহ শীর্ষ রফতানিকারক দেশগুলো এসব প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করছে।

তথ্য বলছে, বর্তমানে ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে তুলার ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য ১০ মাসের সর্বনিম্নে অবস্থান করছে। প্রতি পাউন্ড লেনদেন হচ্ছে ৯৪ দশমিক ২৫ সেন্টে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *