ভারতে নির্যাতনের শিকার সেই তরুণী দেশে ফিরলেন

স্টাফ রিপোর্টার

গত বছর বেঙ্গালুরুতে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় আলোচিত ভুক্তভোগী সেই তরুণীকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করেছে ভারত।

শনিবার (২১ মে) সন্ধ্যায় বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের একটি দলের কাছে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করে ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুক।

তিনি বলেন, ভিক্টিমকে আমাদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। এখন ঢাকার পথে রয়েছে। রোববার (২২ মে) ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ভারতে ওই তরুণীকে পাচার ও দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে সাত বাংলাদেশিসহ মোট ১০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। ভারতের বেঙ্গালুরুর একটি বিশেষ আদালত এ দণ্ডাদেশ দেন। এর মধ্যে সাতজনকে যাবজ্জীবন, একজনকে ২০ বছর ও একজনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২৯ মে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।

দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- সবুজ, টিকটিক হৃদয় ওরফে হৃদয় বাবু, রাফসান মণ্ডল, রকিবুল ইসলাম সাগর, মোহাম্মদ বাবু, ডালিম ও আজিম। তাদের প্রত্যেককেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তানিয়া নামে মামলার আরেক আসামিকে দেওয়া হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড। এছাড়া আরেক আসামি জামালকে দেওয়া হয়েছে ৫ বছরের কারাদণ্ড এবং অপর দুই আসামি নুসরাত ও কাজলকে ৯ মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় নিজের মেয়েকে শনাক্ত করে গত বছরের ২৭ মে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচারের মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা।

মামলার এজাহারে ভুক্তভোগীর বাবা জানান, তিনি মগবাজার এলাকার ফুটপাতে ব্যবসা করেন। তার মেয়ের ৬-৭ বছর আগে বিয়ে হয়। স্বামী ৩ বছর ধরে কুয়েতে থাকেন। স্বামী বিদেশ যাওয়ার পর থেকে তিনি (ভুক্তভোগী) বাবা ও শ্বশুরবাড়ি উভয় জায়গায় থাকতেন। ১৫ মাস আগে বাবাকে জানান, তিনি (ভুক্তভোগী) দুবাই যাবেন। বাবা তাকে বারণ করেন। তবে ১ বছর ধরে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে তিনি জানতে পারেন, মগবাজারের রিফাদুল ইসলাম ওরফে টিকটক হৃদয় তাকে (মেয়েকে) ফুসলিয়ে বিক্রির উদ্দেশ্যে পাচার করেন। কিছুদিন আগে ভুক্তভোগীর বাবা জানতে পারেন, মেয়েটি হৃদয়ের সঙ্গে ভারতে আছেন। তবে সম্প্রতি ভিডিওটি দেখে তিনি নিজের মেয়েকে চিনতে পারেন।

ভিডিওতে দেখা গেছে, ভারতে নিয়ে গিয়ে টিকটক হৃদয়ের সঙ্গে এক মেয়েসহ তিন-চারজন ভুক্তভোগীর হাত-পা-মুখ চেপে ধরে অমানুষিক যৌন নির্যাতন করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *