ডি কক ১৪০ করলেও হারতে বসেছিল লখনৌ
চরম নাটকীয়তা তৈরি হয়েছিল শেষ ওভারে। এই ওভারে জয়ের জন্য ২১ রান প্রয়োজন কেকেআরের। উইকেটে তখন রিঙ্কু সিং আর সুনিল নারিন। লখনৌয়ের হয়ে বোলিং করতে আসেন অস্ট্রেলিয়ান মার্কাস স্টোইনিজ।
প্রথম বলেই বাউন্ডারি, পরের দুই বলে টানা দুটি ছক্কা। তিন বলেই উঠে গেলো ১৬ রান। চতুর্থ বলে ২ রান নিলে রিঙ্কু। চার বলে হলো ১৮ রান। শেষ দুই বলে প্রয়োজন আর মাত্র ৩ রান। রিঙ্কু সিং যেভাবে জ্বলে উঠেছেন, তাতে তো জয় নিশ্চিতই।
কিন্তু ভাগ্যে তাদের লেখা ছিল ভিন্ন কিছু। পঞ্চম বলে এসে উইকেট হারিয়ে বসলেন রিঙ্কু সিং। মূলতঃ এভিন লুইসের অতিমানবীয় ক্যাচের শিকার হলেন তিনি। ধারাভাষ্যকাররা বলছে, গোল মেডেল ক্যাচ। আইপিএলের হল অব ফেমে সর্বকালের সেরা ক্যাচগুলোর অন্যতম হিসেবে ঠাঁই পাবে এই ক্যাচ। তবে নিঃসন্দেহে এবারের আইপিএলের সেরা ক্যাচ এটি।
স্টোইনিজের বলে কাভারের ওপর দিয়ে খেলেন রিঙ্কু। লুইস দাঁড়ানো ছিলেন ৩০ গজের সীমানায়। নিজের বাম পাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে এত অবিশ্বাস্যভাবে ক্যাচটি ধরলেন তিনি, তা দেখে চক্ষু ছানাবড়া হয়ে যাওয়ার জোগাড়। ক্যাচটি না ধরলে নিশ্চিত বাউন্ডারি। কিন্তু সে জায়গায় বিধ্বংসী রিঙ্কুকে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন তিনি।
শেষ বলে ব্যাট করতে নামলেন উমেষ যাদব। ইয়র্কার ছুঁড়লেন স্টোইনিজ। বলটাকে ঠেকাতেও পারেননি যাদব। বোল্ড হয়ে গেলেন। অর্থ্যাৎ, শেষ দুই বলে টানা দুই উইকেট হারিয়ে পরাজয় বরণ করে নিলো কলকাতা, মাত্র ২ রানের ব্যবধানে।
২১০ রান তাড়া করতে নেমেছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। শেষ দুই বল পর্যন্ত সমান তালেই লড়ছিল তারা। ৮ উইকেট হারিয়ে করে ফেলেছিল ২০৮ রান। কিন্তু দুর্ভাগ্য তাদের। শেষ দুই বলই খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় এবং এবারের আইপিএলের গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় গতবারের ফাইনালিস্টদের।
২১১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই দুই ওপেনার ভেঙ্কটেশ আয়ার এবং আভজিত টোমারের উইকেট হারায় কেকেআর। আয়ার তো কোনো রানই করতে পারেননি। আবজিত করেন ৪ রান। এরপর ঘুরে দাঁড়ায় কেকেআর। নিতিশ রানা এবং শ্রেয়াস আয়ার মিলে হাল ধরেন। ২২ বলে ৪২ রান করে আউট হন নিতিশ রানা। ৯টি বাউন্ডারির মার মারেন তিনি।
অধিনায়ক স্রেয়াশ আয়ার ২৯ বলে করেন ৫০ রান। স্যাম বিলিংস ২৪ বলে করেন ৩৬ রান। রিঙ্কু সিং ১৫ বলে ৪০ রান করে আউট হন। সুনিল নারিন অপরাজিত থাকেন ৭ বলে ২১ রান করে। ৩টি করে উইকেট নেন মহসিন খান এবং মার্কাস স্টোইনিজ। ১টি করে উইকেট নেন কে গৌতম এবং রবি বিশনোই।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়ে ২১০ রান করে লখনৌ সুপার জায়ান্ট। কুইন্টন ডি কক ৭০ বলে করেন ১৪০ রান। ১০টি করে বাউন্ডারি এবং ছক্কার মার মারেন তিনি।
এ নিয়ে গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হলো লখনৌ সুপার জায়ান্টস এবং কলাকাত নাইট রাইডার্সের। ১৪ ম্যাচ শেষে লখনৌয়ের পয়েন্ট ১৮ এবং কলকাতার অর্জন ১২ পয়েন্ট।