বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি ব্যবহারের খরচ কমেছে
কয়েক মাস ধরে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা চলছে। ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে সরবরাহ নিয়ে অনিশ্চয়তায় জ্বালানির দাম রেকর্ড পর্যায়ে উন্নীত হয়। এতে যুক্তরাজ্যে পেট্রলের চেয়ে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি (ইভি) ব্যবহারে বার্ষিক ব্যয়ের ব্যবধান প্রসারিত হয়েছে। নতুন একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, পেট্রলচালিত গাড়ির চেয়ে ইভি ব্যবহারে বার্ষিক প্রায় ৬০০ পাউন্ড কম খরচ হয়। খবর দ্য গার্ডিয়ান।
তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করা ওয়েবসাইট কমপেয়ার দ্য মার্কেটের গবেষণায় উঠে এসেছে, এরই মধ্যে ইভি চালানোর ব্যয় পেট্রলচালিত গাড়ির চেয়ে সস্তা ছিল। তবে ইউক্রেনে যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতায় দুই ধরনের গাড়ির ব্যয়ের ব্যবধান উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে। একটি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি চালানোর জন্য গড় বার্ষিক ব্যয় এখন ১ হাজার ২৬৪ পাউন্ড। যেখানে পেট্রলচালিত গাড়ির গড় ব্যয় ১ হাজার ৮৩৪ পাউন্ড।
যদিও সব ধরনের যানবাহন চালানোই এক বছর আগের তুলনায় অনেক বেশি ব্যয়বহুল। মার্চে পেট্রলের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। তবে চলতি মাসে সামান্য কমেও গিয়েছে। পেট্রলচালিত গাড়ির নিবন্ধন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। এ গাড়ির ব্যয় এক বছরে ৩০০ পাউন্ডেরও বেশি বেড়েছে। যেখানে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির মালিকানা নিতে ব্যয় বেড়েছে ১৩৭ পাউন্ড। অর্থাৎ ইভি নিবন্ধনের খরচ ৪০৩ থেকে ৫৭০ পাউন্ডে উন্নীত হয়েছে।
এ পরিসংখ্যানে বীমা, এমওটি ও জ্বালানির গড় ব্যয় অন্তর্ভুক্ত। পাশাপাশি পেট্রলচালিত গাড়ির জন্য ১৬৫ পাউন্ড আবগারি শুল্ক হিসাব করা হয়েছে। বিদ্যুচ্চালিত গাড়িতে এ শুল্ক অব্যাহতি দেয়া হয়। গবেষণাটিতে ধরা হয়েছে, একজন চালক বছরে ৬ হাজার ৭০০ মাইল ভ্রমণ করেন, পেট্রলের জন্য প্রতি লিটার ১ পাউন্ড ৬২ পেনি কিংবা বিদ্যুতের জন্য ২৮ পেনি পরিশোধ করেন। যেসব চালক তাদের বিদ্যুতের জন্য বিশেষ ইভি শুল্কের আওতায়, তারা অনেক কম অর্থ প্রদান করবেন। সুতরাং তাদের সঞ্চয় আরো বেশি হবে।
কমপেয়ার দ্য মার্কেটের ডিরেক্টর অ্যালেক্স হেস্টি বলেন, বিদ্যুতের বিল বাড়তে থাকা সত্ত্বেও অনেক গ্রাহক ইভিতে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। তারা এটা দেখে খুশি হবেন, পেট্রলের চেয়ে বিদ্যুতে গাড়ি চালানো যথেষ্ট কম খরচের। পাশাপাশি এ গাড়ি পরিবেশবান্দব। এছাড়া এটি গ্রাহকদের জ্বালানি তেল, ইন্স্যুরেন্স ও কর বাঁচিয়ে দিচ্ছে।
কয়েক বছর ধরেই গ্রাহকরা জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত গাড়ি ছেড়ে ইভিতে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। ফলে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির বিক্রিও ঊর্ধ্বমুখী। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) বিশ্বজুড়ে সামগ্রিক গাড়ি বিক্রি সংকুচিত হলেও ইভি বিক্রি বেড়েছে। বর্তমানে ক্রমবর্ধমান পেট্রল ও ডিজেলের দাম ইভিকে অনেক গ্রাহকের কাছেই একটি আকর্ষণীয় বিকল্প করে তুলেছে। এ খাতের পরিসংখ্যান অনুসারে, মার্চে ব্রিটিশরা যে সংখ্যক ইভি কিনেছে, তা পুরো ২০১৯ সালের তুলনায় অনেক বেশি। খরচ কমে যাওয়ায় এ গাড়ির বিক্রি আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
যদিও অনেক ব্রিটিশ গ্রাহকের জন্য ইভি কেনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাও রয়েছে। হ্যাস্টি বলেন, একটি বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি কেনা এবং একটি হোম চার্জিং পয়েন্ট ইনস্টল করার একটি উল্লেখযোগ্য আগাম খরচ রয়েছে। অনেক মানুষ গাড়ি কেনার পাশাপাশি এ ব্যয় বহন করতে সক্ষম নাও হতে পারে।