অর্থপাচার ঠেকাতে পণ্য জাহাজীকরণে ট্র্যাকিং

স্টাফ রিপোর্টার

রপ্তানির আড়ালে দেশ থেকে অর্থপাচার ঠেকাতে রপ্তানি পণ্যবাহী যানসমূহ ট্র্যাকিং ও স্কিনিং করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রপ্তানিপণ্য পাঠাতে ব্যবহৃত জাহাজ ও কন্টেইনারের ওপর বিশেষ নজর দিতে বৈদেশিক লেনদেনে জড়িত অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকসমূহকে এসব নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) থেকে প্রাপ্ত তথ্যের আলোকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বুধবার (২০ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন মতে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের বিশেষ দল কিছু রপ্তানিকারকের রপ্তানি করা পণ্য ও চালানের মধ্যে গড়মিল খুঁজে পেয়েছেন। এমনকি তারা অনুমোদিত ডিলার (এডি) ব্যাংকসমূহের কাছেও তথ্য গোপন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চক্র ও পণ্য জাহাজীকরণে জড়িত একটি মহলের সহায়তায় বিদেশে পণ্য পাঠিয়ে বাড়তি আয় করেন। আর এই অপ্রদর্শিত বাড়তি আয় বিদেশে পাচার করা হয়।

এভাবে অর্থ পাচার ঠেকাতে পণ্যবাহী যানসমূহ ট্র্যাকিং ও স্কিনিং করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। রপ্তানি খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ এবং এ খাতকে সুরক্ষা দিতে পণ্যবাহী জাহাজ ও কন্টেইনারের মালামালে ট্র্যাকিং করতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা বলেন, রপ্তানি করা পণ্যের চালানে তথ্য গোপন করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অর্থপাচার করেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এমন প্রমাণ পেয়েছে। রপ্তানি খাতকে সুরক্ষা ও দেশের অর্থ পাচার বন্ধে রপ্তানি পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত জাহাজ ও কন্টেইনারের মালামালে ট্র্যাকিং এবং চালানের সঙ্গে মেলাতে এডি ব্যাংকসমূহকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। অনিয়ম ধরা পড়লে পরবর্তী আইন অনযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জেল-জরিমনা করা হবে।

মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর অধীনে বৈধ বা অবৈধ উপায়ে অর্জিত অর্থ বা সম্পত্তি নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিদেশে পাচার করা ও জ্ঞাত হিসাবের অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধও অপরাধ। কোনো ব্যক্তি মানিলন্ডারিং অপরাধ করলে বা মানিলন্ডারিং অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করলে তিনি কমপক্ষে চার বছর এবং অনধিক ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এর অতিরিক্ত অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুণ মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আদালত কোনো অর্থদণ্ড বা দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে দণ্ডিত ব্যক্তির সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার আদেশ প্রদান করতে পারবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *