বিসিক প্রধান কার্যালয় ও মাদারীপুর শিল্পনগরী সম্প্রসারণ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল ২০২২) রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বাস্তবায়িত ১৪ তলা বিশিষ্ট বিসিক প্রধান কার্যালয় (নতুন) এবং মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী (সম্প্রসারণ) প্রকল্পসহ মোট ৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২০ এপ্রিল, ২০২২) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় বিসিক।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী সংযুক্ত থেকে বিসিক প্রধান কার্যালয়, মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী (সম্প্রসারণ), ‘বিটাকের কার্যক্রম শক্তিশালী করার লক্ষ্যে টেস্টিং সুবিধাসহ টুল ইনস্টিটিউট স্থাপন’ এবং বিএসইসি এর ‘এলইডি লাইট (সিকেডি) এ্যাসেমব্লিং প্ল্যান্ট স্থাপন’ শীর্ষক ৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ঘোড়াশাল পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন।
বিসিকের কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং উন্নত কর্ম পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তেঁজগাও এলাকায় নির্মিত হয়েছে ১৪ তলা বিশিষ্ট বিসিক প্রধান কার্যালয়।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বিসিকের মতিঝিলস্থ অফিস ভবনের সকল কার্যালয়সহ ঢাকাস্থ অন্যান্য সকল অফিস একই ভবনে স্থানান্তর এবং আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রকল্প অফিসসমূহ একই ভবনে স্থানান্তরের মাধ্যমে ভাড়া বাবদ দেয় সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে । বিসিক প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রায় ৫০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অফিস কক্ষ/ওয়ার্ক স্টেশনের সংস্থান হয়েছে এই প্রকল্পের মাধ্যমে।
বিসিক প্রধান কার্যালয়ে ১২৬,৯০০ বর্গফুট জায়গার সংস্থান রয়েছে। ভবনটি পরিবেশবান্ধব (সোলার সিস্টেম, রেইন ওয়াটার হারভেস্টিং ব্যবস্থা ইত্যাদির সুব্যবস্থা রয়েছে)। ২টি বেজমেন্টে ৬৪ টি গাড়ি পার্কিং সুবিধা, ৪টি প্যাসেঞ্জার লিফটসহ ১৪ তলা ভবন; মাল্টিমিডিয়া সুবিধাসহ বিভিন্ন সভা/সেমিনার পরিচালনার জন্য ৪টি কনফারেন্স/সভা কক্ষের ব্যবস্থা; বিসিক প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত প্রায় ৫০০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য অফিস কক্ষ/ওয়ার্ক স্টেশনের সংস্থান; সকল কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর একই ভবনে সমন্বিতভাবে স্বল্প সময়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনা; ভবনের নীচ তলায় কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোক্তাদের জন্য ৩,৮৪১ বর্গফুট জায়গায় পণ্য প্রদর্শনীর সংস্থান; মাল্টিমিডিয়া ও আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ৩টি প্রশিক্ষণ কক্ষের ব্যবস্থা; প্রত্যেক ফ্লোরে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক ওয়াশরুমের ব্যবস্থা; প্রত্যেক ফ্লোরে ফায়ার ফাইটিংয়ের ব্যবস্থা এবং অফিস ভাড়া বাবদ প্রতি বছর প্রায় ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) ১৯৮৭ সালে মাদারীপুর জেলায় ১৬.৩৩ একর আয়তন বিশিষ্ট একটি শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠা করে। এ শিল্পনগরীর বর্তমানে সেখানে ৯৩টি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে তেলের মিল, বেকারী, আটা-ময়দা-সুজির কারখানা, পিভিসি পাইপ, ফার্নিচার এবং এ্যালুমিনিয়াম কারখানা উল্লেখযোগ্য।
শিল্পোদ্যোক্তাদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার আলোকে ২০১৪ সালে মাদারীপুর জেলায় আরও একটি শিল্পনগরী ( মাদারীপুর বিসিক শিল্পনগরী সম্প্রসারণ) প্রকল্প স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
এই প্রকল্পের লক্ষ্য হলো পরিবেশসম্মত শিল্পনগরী স্থাপনের মাধ্যমে শিল্প প্লটের চাহিদা পূরণ করা; নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামো যেমন: ভূমি উন্নয়ন, রাস্তা, পানি সরবরাহ, বিদ্যুৎ, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ১৫৮টি প্লটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ইউনিট স্থাপন করা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখা।
প্রকল্পটি ৫৩ কোটি ৯৯ লক্ষ ৭৩ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০.০৫৫ একর জমিতে বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকল্পটিতে মোট শিল্প প্লটের সংখ্যা ১৫৮টি এবং ৭,০০০ জন নারী পুরুষে কর্মসংস্থান হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রকল্পটিতে সম্ভাব্য শিল্প খাতগুলো হলো খাদ্য ও খাদ্যজাত সামগ্রী, বস্ত্র ও বস্ত্রজাত সামগ্রী, অটোমোবাইল সার্ভিসিং, ইলেকট্রিক ও ইলেক্ট্রিক্যাল সামগ্রী, সাইকেল ও মোটরসাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি, কাঠের আসবাবপত্র, স্টীলের আসবাবপত্র, গবাদি পশুর খাদ্য তৈরি ইত্যাদি।