এশিয়ায় বায়োফুয়েল বাইক আনার লক্ষ্য ইয়ামাহার
কার্বন নিঃসরণ বন্ধে বিশ্বজুড়ে জোর প্রচেষ্টা চলছে। জলবায়ু উষ্ণায়নে অবদান রাখা এ নিঃসরণ বন্ধে বৈদ্যুতিকে স্থানান্তরিত হচ্ছে অটোমোবাইল শিল্প। এরই অংশ হিসেবে বিদ্যুচ্চালিত মোটরসাইকেলে মনোযোগ বাড়াচ্ছে ইয়ামাহা মোটর। এশিয়ায় শিগগিরই সিনথেটিক জ্বালানির দুই চাকার যান নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়েছে জাপানি সংস্থাটি। খবর নিক্কেই এশিয়া।
বায়োইথানল ও অন্যান্য কাঁচামাল থেকে সিনথেটিক জ্বালানি তৈরি করা হয়। এ জ্বালানির ব্যবহারকে যাত্রীবাহী যানবাহন থেকে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর পথে একটি পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হয়।
ইয়ামাহা মোটরের প্রেসিডেন্ট ইয়োশিহিরো হিদাকা বলেন, সিনথেটিক জ্বালানি চালিত মোটরসাইকেলেও বর্তমানের জীবাশ্ম জ্বালানির ইঞ্জিন থাকবে। তবে সেগুলো বর্তমানের ইঞ্জিনের মতো এতটা কার্বন নিঃসরণ করবে না।
এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি পেট্রল ও ইথানলের মিশ্রণে ব্রাজিলে কিছু স্পোর্টস মোটরসাইকেল বিক্রি করেছে। একই ধরনের বাইক ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে বিক্রি শুরুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। শিগগিরই এ পদক্ষেপের বাস্তবায়ন শুরু হবে বলে আশাবাদী ইয়ামাহা।
ইয়ামাহার বার্ষিক সরবরাহের প্রায় ৮০ শতাংশই বিক্রি হয় এশিয়ায়। ফলে বড় এ বাজারে আধিপত্য ধরে রাখতে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে জাপানি সংস্থাটি। এরই অংশ হিসেবে অটোমোবাইল শিল্পের বৈদ্যুতিকে স্থানান্তরের এ সময়ে ইয়ামাহাও লক্ষ্যমাত্রার ঘোষণা দিয়েছে। সংস্থাটি ২০২৪ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে ১০টিরও বেশি বিদ্যুচ্চালিত মোটরসাইকেল মডেল চালু করতে চায়।
ইয়োশিহিরো হিদাকা বলেন, এশিয়া ও এর বাইরের বাজারগুলো নিয়ে আমাদের পৃথক পরিকল্পনা রয়েছে। এশিয়ায় আমরা বিদ্যুচ্চালিত মোটরসাইকেল চালুর জন্য বেশি তাড়াহুড়া করছি না। কারণ বিদ্যুচ্চালিত মোটরসাইকেলের জন্য বিস্তৃত চার্জিং অবকাঠামোর প্রয়োজন রয়েছে। আপনি চাইলেই হঠাৎ করে এগুলো গড়ে তুলতে পারবেন না। সুতরাং বাজার চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখেই আমাদের পরিকল্পনা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
এশীয় অঞ্চলের বেশ কয়েকটি দেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ খুব বেশি স্থিতিশীল নয়। এমন দেশগুলোর পক্ষে ব্যাপক আকারে বিদ্যুচ্চালিত যানবাহন গ্রহণ কঠিন হয়ে উঠতে পারে। যদিও দেশগুলো কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামাতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সবদিক বিবেচনা করে আমরা এশিয়ায় কম কার্বন নিঃসরণ করা মডেলগুলো দিয়ে শুরু করব। যেমন সিনথেটিক ফুয়েল মোটরবাইক। পাশাপাশি সময়ের সঙ্গে ধীরে ধীরে আমরা বিদ্যুচ্চালিত লাইনআপ প্রসারিত করব। যদিও বায়োফুয়েল ব্যবহারেও বিভিন্ন ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে। এ জ্বালানির উৎপাদন ও সরবরাহের পরিকাঠামো এখনো অপ্রতুল।
হিদাকা বলেন, আমরা শুনেছি ভারত সরকার জৈব জ্বালানি সম্পর্কে উৎসাহী। তারা কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণেরও পরিকল্পনা করছে।
এর আগে গত সপ্তাহে ইয়োশিহিরো হিদাকা একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন, হাইড্রোজেন ইঞ্জিন তৈরি করতে ইয়ামাহা জাপানি গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টয়োটা মোটরের সঙ্গে কাজ করছে। সে সময় তিনি বলেন, কার্বন ক্ষতিকর হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, জীবাশ্ম জ্বালানি চালিত ইঞ্জিন ক্ষতিকর নয়। আমাদের এ ইঞ্জিন ব্যবহার করেই সমাধান খুঁজে বের করতে হবে, যা কার্বন নিঃসরণ করে না।
হাইড্রোজেন ইঞ্জিনগুলো প্রচলিত জীবাশ্ম জ্বালানি ইঞ্জিনের মতো একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তবে এ ইঞ্জিন প্রায় শূন্য কার্বন নিঃসরণে সক্ষম। এ ইঞ্জিনে জীবাশ্ম জ্বালানির পরিবর্তে হাইড্রোজেন ব্যবহার করা হয়।