শুকনো মরিচ আমদানি কমেছে

স্টাফ রিপোর্টার

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি কমেছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে মসলা পণ্যটির আমদানি গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে। ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকরা বলছেন, ভারতে সরবরাহ কমে যাওয়ায় আমদানিতে নিম্নমুখিতা তৈরি হয়েছে।

অন্যদিকে আমদানি কমে যাওয়ায় সাতক্ষীরার পাইকারি ও খুচরা বাজারে শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে। গত তিন সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারিতে প্রতি কেজি শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। খুচরা বাজারে ৩০-৩৫ টাকা বেড়েছে।

ভোমরা স্থলবন্দরের মসলা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স রাফসান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. আবু হাসান জানান, আমদানীকৃত অন্যান্য মসলা পণ্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে শুকনো মরিচ আমদানি করে তার প্রতিষ্ঠান। সম্প্রতি শুকনো মরিচ আমদানি কমেছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ভারতের বাজারে শুকনো মরিচের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশটির ব্যবসায়ীরা পণ্যটির রফতানিও কমিয়ে দিয়েছে। এ কারণে শুকনো মরিচের আমদানি কমেছে। তিনি জানান, এক মাস আগেও তার প্রতিষ্ঠানে সপ্তাহে গড়ে ৩০-৩৫ ট্রাক শুকনো মরিচ আমদানি হতো। এখন সেখানে সপ্তাহে ১৮-২০ ট্রাক শুকনো মরিচ আমদানি হচ্ছে। আমদানি কমায় দেশের বাজারে শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে।

এদিকে গতকাল সাতক্ষীরা সুলতানপুর বড় বাজারের কয়েকটি মসলা বিক্রি আড়তে ঘুরে দেখা গেছে, গত ২০ দিনের ব্যবধানে শুকনো মরিচের দাম পাইকারি পর্যায়ে কেজিতে ২৫-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এ বাজারের মেসার্স মামা-ভাগ্না ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. জহুরুল হক জানান, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় শুকনো মরিচের দাম বেড়েছে। তিন সপ্তাহ আগেও তার প্রতিষ্ঠানে শুকনো মরিচ পাইকারি বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২৪৫-২৫০ টাকা। তা গতকাল বিক্রি করেছেন ২৭৫-২৮০ টাকা দরে। ফলে কেজিতে ২৫-৩০ টাকা দাম বেড়েছে। একই চিত্র দেখা যায় খুচরা বাজারেও। দুই-তিন সপ্তাহ আগেও যে শুকনো মরিচ ২৮০-২৯০ টাকা ছিল, তা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা দরে।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে শুকনো মরিচ আমদানি হয়েছিল ৪৩ হাজার ৩৪৯ টন। যার মূল্য ৬২৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এখান থেকে সরকারের রাজস্ব আয় হয়েছিল ৬২ কোটি ৬৪ লাখ।

কিন্তু চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় অর্থাৎ জুলাই-মার্চ পর্যন্ত শুকনো মরিচ আমদানি হয়েছে ২৪ হাজার ১৭৭ টন, যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ কম। আমদানীকৃত শুকনো মরিচের মূল্য ৩৬৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা, যা থেকে সরকারের রাজস্ব এসেছে ৩৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।

ভোমরা শুল্ক স্টেশনের দায়িত্বরত কাস্টমসের বিভাগীয় সহকারী কমিশনার আমীর মামুন জানান, পণ্যটি আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্বও কম এসেছে। গত অর্থবছরের একই সময় ৬২ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে শুকনো মরিচ আমদানিতে। সেখানে চলতি বছর ৩৫ কোটি টাকার মতো আয় হয়েছে। শুকনো মরিচ আমদানি যেমন কমেছে, তেমনি পণ্যটির রাজস্ব আয়ও কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *