রেকর্ড দরপতন তেলের বাজারে

স্টাফ রিপোর্টার

বিশ্ববাজারে গত দুই বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় দরপতন হয়েছে অপরিশোধিত তেলের। গত এক সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ও ডব্লিউটিআই (ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট) উভয় তেলের দাম কমেছে অন্তত ১৩ শতাংশ, যা ২০২০ সালের পর আর দেখা যায়নি। তবে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় জ্বালানি বাজারে সৃষ্ট অস্থিরতার মধ্যে এই দরপতন স্থায়ী হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। খবর রয়টার্সের।

শুক্রবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম ৩২ সেন্ট বা ০ দশমিক ৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি ব্যারেল ১০৪ দশমিক ৩৯ মার্কিন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ডব্লিউটিআই তেলের দাম ১ দশমিক ০১ ডলার বা ১ শতাংশ কমে বিক্রি হয়েছে ৯৯ দশমিক ২৭ ডলারে।

এর একদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী মে মাস থেকে টানা ছয় মাস যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ থেকে দৈনিক ১০ লাখ ব্যারেল তেল বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দেন। তার এই ঘোষণা অনুসারে দেশটি ১৮ কোটি ব্যারেল তেল আন্তর্জাতিক বাজারে ছাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ থেকে এটিই হবে সর্বোচ্চ পরিমাণে তেল ছাড়ার ঘটনা।

তবে রুশ জ্বালানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা সামলাতে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপ যথেষ্ট হবে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। পিভিএমের বিশ্লেষক স্টিফেন ব্রেনক বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ব্যারেল ব্যারেল তেল ছাড়ায় এই সত্যটা পরিবর্তন হবে না যে, আগামী মাসগুলোতে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া কঠিন হবে।

তার মতে, নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা ও ক্রেতারা অনুৎসাহিত হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজার দৈনিক যে ৩০ লাখ ব্যারেল রুশ তেল হারাচ্ছে, তার তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রের রিজার্ভ ছাড়ার পরিমাণ খুবই নগণ্য।

গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে রেকর্ড দরপতনের পরেও জেপি মরগ্যান চলতি বছরের বাকি অংশজুড়ে তেলের দামের পূর্বাভাস অপরিবর্তিতই রেখেছে। তাদের ধারণা, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ১১৪ ডলার এবং বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ১০১ ডলার দেখা যেতে পারে।

বহুজাতিক ব্যাংকটি এক নোটে বলেছে, রিজার্ভ ছাড়া তেল সরবরাহের কোনো স্থায়ী উৎস নয়। আগামী বছর যদি আটকে থাকা রুশ তেলের পরিমাণ দৈনিক গড়ে ১০ লাখ ব্যারেলও হয়, তাহলেও গভীর সংকট তৈরি হবে। এতে ২০২৩ সালের জন্য আমাদের তেলের দামের পূর্বাভাস ব্যারেলপ্রতি ৯৮ ডলারও কম মনে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *