বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মধ্যকার প্রাক-বাজেট আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) সমগ্র বাংলাদেশ ভিত্তিক সর্বপ্রকার শিল্পের প্রতিনিধিত্বকারী একক এবং একমাত্র জাতীয় শিল্প চেম্বার । বিসিআই তরুণ শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি, মাইক্রো ও স্মল শিল্প উদ্যোক্তা সৃষ্টি, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিল্পায়নের প্রসার, দেশীয় শিল্পের সুরক্ষা এবং বিনিয়োগ ও শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র বিমোচন ছাড়াও স্থানীয় সকল শিল্পের সর্বপ্রকার প্রতিবন্ধকতা নিরসনে বিসিআই কাজ করে চলেছে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সরকারের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১, এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন-২০৩০, ২০২৬ সনে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রক্রিয়া, ৮ম পঞ্চমবার্ষিক পরিকল্পনা এবং ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পথ প্রদর্শক হিসেবে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট কাজ করবে বলে বিসিআই বিশ্বাস করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বাংলাদেশের করপোরেট ব্যবস্থাকে আন্তর্জাতিক মানদন্ডে নেওয়ার ব্যাপারে কাজ শুরু করেছে এবং আমরাও এ ব্যবস্থাকে সাধুবাদ জানাই।এ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে শিল্প খাতের নিম্নলিখিত সমস্যা সমূহের সমাধানের সুপারিশ পেশ করছি-
- Gross Profit (GP) খাতভিত্তিক ভাবে নির্ধারন করা হয়ে থাকে যা যুক্তি সংগত নয়। আবারGP কমে গেলে অথবা ব্যবসায় লস হলে বিবেচনায় নেয়া হয় না । এমনকি পূর্ববর্তি বছরের তুলনায় বিক্রয় কম হলেও কর কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিতে রাজি হয় না এধারনার সমাপ্ত টানা দরকার;
- নিবন্ধিত হওয়ার পর মুনাফা অর্জনে নির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এসময়কার ব্যয় অথবা লস বিবেচনা করা হয় না ; প্রাথমিক খরচের বিষয়টি (কোম্পানি প্রতিষ্ঠার পূর্বের খরচ) বিবেচনা করার প্রস্তাব করছি;
- ব্যবসায় ক্ষতি হওয়া সত্ত্বেও টার্নওভার কর নির্ধারন করা হয়ে থাকে যা প্রতিষ্ঠানের জন্য বোঝা হয়ে দাড়ায় ;
- আয় কর আইনের ৮২সি ধারা অনুসারে সর্ব নিম্ন কর হিসেবে উৎসে কর কর্তন করা হয়ে থাকে। কিন্তু পরর্বতিতে তা আবার এসেসমেন্ট এ নেওয়াহয়, আমরা উৎসে কর চুড়ান্ত কর দায় বা Final Settlement হিসেবে গণ্যকরার প্রস্তাব করছি;
- কর নিরুপন সম্পন্ন হওয়ার পর আয়কর রিফান্ড সৃষ্টি হলে (ধারা-১৫০, বিধি-৩৬) ফেরত দেওয়ার বিধান থাকলেও অগ্রিম আয় কর ফেরত পাওয়া যায়না আমরা উক্ত ধারার আসু প্রয়োগের প্রস্তাব করছি ;
- আয়কর আইনের ৩০ ধারা মোতাবেক অননুমোদিত খরচ অতিরিক্ত বোঝা বহন করে। এধারার ক্ষেত্রে বিজনেস প্রমোসন এর খরচ যেমন- মার্কেটিং, ইন্টারটেইনমেন্ট, সেম্পল, বিদেশ ভ্রমন,এমপ্লয়ি পারকুইজিট, ইনসেনটিভ বোনাস, টেকনিক্যাল ফি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ধারা ৩০ অনুযায়ি খরচের সীমা রহিত করে প্রকৃত খরচ হিসেবেআমলে নেওয়ার প্রস্তাব করছি ;
- বর্তমান আইনে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে বিভিন্ন খরচের উপরমূসকের হার ৫% থেকে ১৫% আরোপিত আছে, আমরা এহার ৩% হতে ১০% মধ্যে নির্ধারন করা এবং রেট নির্বিশেষে (উতপাদ কর) সকল ক্ষেত্রে উপকরন কর (input tax ) রেয়াত অনুমদনের প্রস্তাব করছি;
- বিবিধ খরচ দেখানোর কোন বিধান নেই কিন্তু প্রতিষ্ঠানের প্রবৃদ্ধির সাথে বিবিধ খরচ এবং অনবলোকিত খরচ অপরিহার্য যা কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নিতে রাজি নয়, আমরা বিবিধ খরচকে বিবেচনার প্রস্তাব করছি।
- সম্পদ অর্জনের (Asset Acquisition) এর ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন না করা হলে তা অন্যান্য উৎসের আয় হিসেবে বিবেচিত হওয়ার {ধারা-১৯ (৩২)মোতাবেক} বিধান বাতিলের প্রস্তাব করছি।
বিসিআই মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং তার ধারাবাহিকতায় আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট ২০২২-২০২৩ এ বাজেটে অন্তর্ভূক্তির জন্য নিম্নলিখিত সুপারিশ পেশ করছে-
- তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য বাজেটে বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে কিন্তু সুষ্ঠু নীতিমালার অভাবে এই তহবিলের সুফল পাওয়া সম্ভব হয়নি আমরা তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল বিতরনের জন্য নীতিমালা প্রনয়নের প্রস্তাব করছি;
- কর ব্যবস্থাকে স্বচ্ছ, দ্রুত, আধুনিক, যুগোপযোগী এবং সকলকে কর প্রদানে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কর ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরুরে ডিজিটাল করার প্রস্তাব করছি;
- Technical & Vocational Course কে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে Investment & Income কর অবকাশ প্রদান করা ;
- Professional, Technician trainer এর ক্ষেত্রে যদি Institution এমনকি Industry- ও নিয়োগ দেয় তাদের মজুরী করমুক্ত রাখা ;
- শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ০% থেকে ৩% উৎস কর নির্ধারনের প্রস্তাব করছি ;
- বৃহত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৩% এবং এসএমই খাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৫% শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক নিয়োগ করলে ২% কর রেয়াতের প্রস্তাব করছি ;
- মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতে সব ধরনের Utility র উপর ভ্যাট অব্যাহতির সুপারিশ করছি ;
- মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য নূন্যতম ৫ বছর কর অবকাশ প্রদান করা এবং পরবর্তিতে ১০% থেকে ১৫% এর মধ্যে কর নির্ধারনের সুপারিশ করছি ;
- Eco friendly environment-এবং গ্রিন সার্টিফাইড শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ২% কর রেয়াতের প্রস্তাব করছি ;
- ক্ষুদ্র শিল্প এবং নারী উদ্যোক্তাদের সমন্বয়ে খাত ভিত্তিক যৌথ রপ্তানিমূখি প্রতিষ্ঠানগুলিকে বন্ডেড-ওয়্যারহাউজ সুবিধা প্রদান করা;
- Dividend এর উপর কর ১০% করার সুপারিশ করছি ।
আয়কর সংক্রান্ত প্রস্তাবাবলী
আয়কর:
- বাংলাদেশের কর্পোরেট কর হার আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিসিআই বিগত বছরের ন্যায় আড়াই শতাংশ হারে কমিয়ে আনার প্রস্তাব করছি। এতে সরকারের উপর চাপ কম পড়বে। দেশে বিনিয়োগ বাড়তে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। বিসিআই কর্পোরেট কর হার ধাপে ধাপে কমিয়ে আনার প্রস্তাব করছে ;
- শিল্প ক্ষেত্রে মূসক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশী। শিল্প খাত রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মূদ্রা আয় এবং আমদানি হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে দেশের অর্থনীতিতে অধিক ভূমিকা রাখে বিধায় মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতের জন্য কর্পোরেট কর ১০% থেকে ১৫% এর মধ্যে নির্ধারনের প্রস্তাব করছি ;
- আমদানী পর্যায়ে নিয়মমোতাবেক শুল্ক-করাদি প্রদান করা স্বত্বেও আয়কর রিটার্ন দাখিল কালিন সময়ে একজন ইন্সপেক্টর কর্তৃক মাঠ পর্যায়ে তদারকি প্রতিবেদন প্রদানের বিধান রহিত করার প্রস্তাব করছি।
- আমরা করমুক্ত আয়ের সীমা ৪ লক্ষ টাকায় উন্নীত করার প্রস্তাব করছি । ব্যক্তিগত করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুণঃনির্ধারণ: মূল্যস্ফীতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী ২০২২-২০২৩ কর বৎসরের জন্য বর্তমান ব্যক্তিগত করমূক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনঃনির্ধারনের প্রস্তাব করছি-
বর্তমান অবস্থা ২০২১-২২ অর্থ বছর | প্রস্তাব (২০২২-২৩) |
ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমাঃ ৩,০০,০০০ /- টাকা
মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বৎসর বা তদুর্ধ্ব বয়সের সংশ্লিষ্ট সকল করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৩,৫০,০০০/- টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৪,৫০,০০০/- টাকা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৪,৭৫,০০০/- টাকা |
ব্যক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমাঃ ৪,০০,০০০/- টাকা
মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বৎসর বা তদুর্ধ্ব বয়সের সংশ্লিষ্ট সকল করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৪, ৫০,০০০/- টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৫,০০,০০০/- টাকা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ৫,০০,০০০/- টাকা |
ব্যক্তিগত করের হারঃ
প্রথম ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর শুন্য পরবর্তী ১,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ৫% পরবর্তী ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ১০% পরবর্তী ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ১৫% পরবর্তী ৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ২০% অবশিষ্ট আয়ের উপর ২৫% |
ব্যক্তিগত করের হারঃ
প্রথম ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর শুন্য পরবর্তী ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ৫% পরবর্তী ৫,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ১০% পরবর্তী ৬,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ১৫% পরবর্তী ১০,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত আয়ের উপর ২০% অবশিষ্ট আয়ের উপর ২৫% |
ক্র.ন. | প্রস্তাবের বিষয় | সংশ্লিষ্ট ধারা | বিদ্যমান বিধান | প্রস্তাবিত বিধান | প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি | রাজস্বের উপর সম্ভাব্য প্রভাব | মন্তব্য |
৫. | 30B প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। | 30B. Treatment of disallowances | Notwithstanding anything contained in section 82C or any loss or profit computed under the head “Income from
business or profession’’, The amount of disallowances made under section 30 shall be treated separately as “Income from business or profession’’ and the tax shall be payable there or at the regular rate’’. |
30B প্রত্যাহার করার প্রস্তাব করছি। | “The amount of
disallowances” এটি একটি ব্যয় খাত। অগ্রাহ্যকৃত ব্যয়কে আয় হিসেবে গন্য করে সংযোজিত ৩০বি ধারা অনুযায়ী নিয়মিত হারে কর আরোপ করা হচ্ছে। ফলে রেয়াতি কর সুবিধা প্রাপ্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নির্ধারিত ট্যাক্সের থেকে বেশি পরিমাণ ট্যাক্স প্রদান করতে হচ্ছে। উক্ত জটিলতা থেকে নিরসনের জন্য নতুন সংযোজিত ধারা 30B. Treatment of disallowances বাতিল করা প্রয়োজন। |
||
৬. | আয়কর অধ্যাদেশে ধারা ১৯ এর অধিন নতুন উপ ধারা ৩২ সংযোজন | আয়কর অধ্যাদেশে ধারা ১৯ এর অধিন নতুন উপ ধারা ৩২ সংযোজন | আয়কর অধ্যাদেশে ধারা ১৯ এর অধিন নতুন উপ ধারা ৩২ সংযোজন
বিদ্যমান আইনে ট্রেডিং বা প্রফিট লস একাউন্টে প্রদর্শিত খরচসমূহের অগ্রাহ্য করা হয় এবং মোট আয়ের অন্তর্ভুক্ত করে নিয়মিত হারে কর আরোপ করা হয়। কিন্তু মূলধনী প্রকৃতির খরচের (capital expenditure) উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তন করা না হলে ধারা ৩০ অনুযায়ী খরচ অগ্রাহ্য করা যায় না। কারণ এ প্রকৃতির খরচসমূহ ট্রেডিং একাউন্ট বা প্রফিট এন্ড লস একাউন্টে দাবী করা হয় না। অর্থ আইন ২০১৯ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ১৯ এর নতুন উপ ধারা ৩২ সংযোজন করা হয়েছে। এর ফলে মূলধনী প্রকৃতির খরচের (capital expenditure) উপর প্রযোজ্য ক্ষেত্রে উৎস কর কর্তন করা না হলে তা অন্যান্য উৎসের আয় হিসাবে গণ্য হবে। |
ধারা ১৯ এর উপ ধারা ৩২ নিয়মিত হারে কর হতে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করছি। | আয়কর অধ্যাদেশের নতুন উপধারা ৩২ সংযোজন যৌক্তিক নয়। কোন কারণে ব্যয়ের ক্ষেত্রে উৎসে কর প্রদান করা না হলে এবং সংশ্লিষ্ট আয়কর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ঐ পরিমাণ ব্যয় disallow হলে তা আয়কর অধ্যাদেশের উপ ধারা ৩২ অনুযায়ী Regular Rate হারে কর প্রদান করতে হবে যা যুক্তিযুক্ত নয়। এরুপ উচ্চ হারের কর প্রদানের ফলে শিল্প কারখানা স্থাপনে ব্যায় বৃদ্ধি পাবে যা প্রতিষ্টানগুলোকে প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় পিছিয়ে দিবে। |
মূল্য সংযোজন কর (মূসক) সংক্রান্ত প্রস্তাবাবলী
মূল্য সংযোজন কর (মূসক)
মূসক ব্যবস্থায় ভোক্তা ও দেশের ৮৫% ক্ষুদ্র ও মাঝারি পণ্য ও সেবা খাতে নিয়োজিত শিল্প ও সেবা খাতের ব্যবসায়ীদের স্বার্থ ও সামর্থ্য অনুযায়ী একটি ভোক্তাবান্ধব, ব্যবসাবান্ধব এবং রাজস্ববান্ধব ভ্যাট ব্যবস্থা বলবৎ করার জন্য নিম্নলিখিত প্রস্তাবগুলো বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি:
মূলধনী যন্ত্র আমদানী পর্যায়ে যেহেতু মূসক অব্যাহতি দেয়া আছে সেহেতু স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত মূলধনী যন্ত্র এর উপর মূসক আরোপ রহিত করার প্রস্তাব করছি ;
মূসক নিবন্ধিত নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্য পণ্য উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে ০% থেকে ৫% মুল্য সংযোজন কর করার প্রস্তাব করছি ;
মূসক নিবন্ধিত রপ্তানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মূসকের সর্বোচ্চ হার ১০% করার প্রস্তাব করছি । যার ফলে বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি হবে এবং সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি পাবে ;
শিল্প খাতে আগাম কর (AT) প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি। প্রতি মাসের নির্ধারিত তারিখে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেওয়ার সঙ্গে আগাম কর ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও ফেরত পাওয়া নিয়ে শুরু থেকেই জটিলতায় পড়তে হয়েছে আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট দের। আমরা এই আগাম কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব করছি।
মূসক সংক্রান্ত সুপারিশ ২০২২-২০২৩
ক্র.নং. | বর্তমান আইন ও বিধিগত অবস্থা | প্রস্তাব
(সংশোধনীর সুনির্দিষ্ট phrase সহ) |
প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তি ও তথ্য-উপাত্ত |
1. | মূসক ও সম্পূরক শুল্ক আইন ২০১২ এর ধারা ২ এর উপধারা (৩২) অনুযায়ী কর বহির্ভূত রাজস্ব আইটেম সমূহ (উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত দ্রব্য) এর আমদানির উপর নির্ধারিত ফি ও মাশুলের অতিরিক্ত ১৫% মূসক প্রদান।
|
উদ্ভিদ ও উদ্ভিদজাত দ্রব্য আমদানি সেবার উপর নির্ধারিত ফি ও মাশুলের অতিরিক্ত শূন্য (০)% মুল্য সংযোজন কর করার প্রস্তাব করছি। | অব্যহতিপ্রাপ্ত শিল্পের গম আমদানি সার্ভিসে ভ্যাট প্রদান, ক্রয় খরচ বৃদ্ধি করে। মুসক (১৫%) খরচ বৃদ্ধিতে অব্যহতিপ্রাপ্ত ভোগপণ্যের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলবে এবং বর্তমান বৈশ্যিক এই কোভিড মহামারিতে দেশীয় ভোগপন্যের বাজারে, ভোগপন্যেকে সহজলভ্য করার সরকারি নীতি বাস্তবায়নে খুবই কঠিন হবে।
যেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ইতিপূর্বে ব্যবসায় উন্নয়নের জন্য এস. আর. ও. নং- ১৮৮/ মুসক/২০১৯ এবং সাধারণ আদেশ নং-২০/মুসক/২০১৯ এর মাধ্যমে বিভিন্ন সেবার উপর মুসক (ভ্যাট) অব্যহতি দিয়ে আসছে। |
আমদানী শুল্ক সংক্রান্ত প্রস্তাবাবলী
শিল্প খাতে আবশ্যকয়ি মূলধনি যন্ত্রপাতি-যন্ত্রাংশ ও সকল ধরণের কাঁচামাল খাত ভিত্তিক প্রজ্ঞাপনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি বিধায় সকল শিল্প খাত এই সুবধিা গ্রহণ করতে পারছে না ফলে খাতভত্তিকি অসঙ্গতি দেখা দিচ্ছে। সকল শিল্প এবং ভবিষ্যতে স্থাপিতব্য শিল্পে ব্যবহার্য কাঁচামালের পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করাও বাস্তবে অসম্ভব । অন্যদিকে মাইক্রো, ক্ষুদ্র এবং অধকিাংশ মাঝারি খাতরে উদ্যোক্তাদরে কাঁচামাল ও বভিন্নি উপকরন সরাসরি আমদানি করার স্বচ্ছলতা না থাকায় বানজ্যিকি আমদানরি ক্ষেত্রে উচ্চতম শুল্কের কারনে খোলা বাজার থেকে অত্যাধিক মুল্যে ক্রয় করতে বাধ্য হন। আমদানি কারক নির্বিশেষে মাইক্রো, ক্ষুদ্র মাঝারি, নারী এবং নুতন শিল্প উদ্যোক্তা সহ সকল শ্রেণীর জন্য বিনিয়োগ বান্ধব এবং উৎপাদশিল পন্য ভত্তিকি আমদানি শুল্ক স্তরঃ-
পরিবর্তন ছাড়াই ব্যবহৃত তৈরি পণ্য সর্বোচ্চ স্তর ২৫%+আরডি+এসডি+আগাম আয়কর+মুসক+আগাম মুসক;
দেশে উৎপাদিত যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ এবং মধ্যবর্তী কাচামাল ৭-১০%+ মুসক;
মৌলিক এবং দেশে উৎপাদিত হয়না এমন কাচামাল ১-৩%+মূসক;
যন্ত্রপাতি এবং অত্যাবশ্যকীয় পন্য কোন শর্ত ছাড়াই ১%;
বর্তমানে ডিজিটাল প্রযুক্তি পণ্য- ডিজিটাল ভিডিও ডিসপ্লে, ডিজিটাল হোয়াইট বোর্ড, এডভারটাইজিং বোর্ড ইত্যাদি পণ্যের কোন এইচ.এস.কোড নাই যার ফলে বিচ্ছিন্ন ভাবে আমদানী হচ্ছে। আমরা এ ধরনের পণ্যের নতুন এইচ.এস. কোডসৃষ্টির প্রস্তাব করছি।