আকরিক লোহা উত্তোলন বাড়াবে চীন
বিভিন্ন দেশে যেসব খনিতে শেয়ার রয়েছে, সেগুলোয় আকরিক লোহা উত্তোলন বাড়াতে চায় চীন। মূলত দেশের বাজারে ইস্পাত উৎপাদনের কাঁচামাল সরবরাহ বাড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির নীতিনির্ধারকরা। চীনা মেটালারজিক্যাল নিউজ সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।
বাজারসংশ্লিষ্টদের বরাত দিয়ে চীনা মেটালারজিক্যাল নিউজ বলেছে, ২০২৫ সালের মধ্যে বিদেশের খনিগুলো থেকে ২২ কোটি টন আকরিক লোহা উত্তোলনের পরিকল্পনা রয়েছে চীনের।
চায়না আয়রন অ্যান্ড স্টিল অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট লু তেইজন বলেন, ১০-১৫ বছরের মধ্যে ইস্পাত উৎপাদনের মূল উপকরণটির সংকট কাটিয়ে উঠতে চায় চীন। এ লক্ষ্যে কর্নারস্টোন প্ল্যান করা হয়েছে। চলতি বছরের প্রথম মাসেই এ প্ল্যান পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
লু বলেন, প্ল্যানের প্রস্তাব অনুযায়ী ২০২০ সালে বিদেশের খনিগুলোয় চীনের আকরিক লোহা উত্তোলন সক্ষমতা ছিল ১২ কোটি টন। ২০২৫ সালের মধ্যে তা বাড়িয়ে ২২ কোটি টনে উন্নীত করা। অন্যদিকে ধাতুটির দেশীয় উৎপাদন ১০ কোটি টন থেকে বাড়িয়ে ৩৭ কোটি টনে উন্নীত করারও পরিকল্পনা রয়েছে। স্টিল স্ক্র্যাপ ব্যবহার সাত কোটি টন থেকে বাড়িয়ে ৩০ কোটি টনে উন্নীত করা।
চীন বিশ্বের শীর্ষ আকরিক লোহা ব্যবহারকারী দেশ। লম্বা সময় ধরেই দেশটিতে ধাতুটির সংকট চলছে। সংকট কাটাতে গত বছরজুড়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে ক্রয় বাড়িয়েছে চীন। করোনা মহামারী শুরুর পর অস্ট্রেলিয়া ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে চিড় ধরে। এর জের ধরেই অবনতি দেখা দেয় বাণিজ্যিক সম্পর্কেও। তবে আকরিক লোহার ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়েনি বললেই চলে। ধাতব পণ্যটির ক্ষেত্রে অন্যবারের মতো গত বছরও দেশটির সবচেয়ে বড় বাজার ছিল চীন। সম্প্রতি সাপ্তাহিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে শিপব্রোকার বাঞ্চেরো কস্তা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়া মোট আকরিক লোহা রফতানির প্রায় ৮০ শতাংশই চীনে সরবরাহ করেছে। এছাড়া চীনের বাজারে পণ্যটির চাহিদা কিছুটা স্তিমিত হয়ে পড়া সত্ত্বেও বৈশ্বিক বাণিজ্য তুলনামূলকভাবে ইতিবাচক ছিল। কারণ বিশ্বের অন্যান্য দেশে এ সময় আকরিক লোহা আমদানি লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে।
পণ্যবাহী জাহাজের তথ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান রেফিনিটিভ জানায়, গত বছর বিশ্বজুড়ে ১৫৫ কোটি ৪১ লাখ টন আকরিক লোহা লোডিং করা হয়েছে, যা ২০২০ সালের তুলনায় ৬ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে সমুদ্রপথে বৈশ্বিক আকরিক লোহা আমদানির ৬৭ শতাংশই পৌঁছেছে চীনের মূল ভূখণ্ডে।
যদিও দুর্বল চাহিদার কারণে দেশটির আমদানি এক বছরের ব্যবধানে ৬ দশমিক ৯ শতাংশ কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০৪ কোটি ৩৬ লাখ টনে।