চীনের ইস্পাত উৎপাদন কমবে

স্টাফ রিপোর্টার

চলতি বছরও অব্যাহতভাবে কমবে চীনের অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন। বছর শেষে উৎপাদন গত বছরের তুলনায় অনেক নিচে নেমে আসবে। কার্বন নিঃসরণ কমানোর সময় শিথিল করা হলেও ইস্পাত উৎপাদন খাতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন না বাজার বিশ্লেষকরা। খবর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল প্লাটস।

কয়েকটি কারখানা সূত্র জানায়, এ বছর অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন নিম্নমুখী রাখতে তাদের এরই মধ্যে মৌখিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এমনকি গত বছরের চেয়েও কম উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে শীতকালীন অলিম্পিককে কেন্দ্র করে বায়ুদূষণ রোধের লক্ষ্যেও ইস্পাত উৎপাদন সীমিত করতে বলা হয়েছে। কয়েকটি সূত্র জানায়, এ কারণে বছরের প্রথম প্রান্তিকে ইস্পাত উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমতে পারে।

চীনের শিল্প ও তথ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি নির্দেশনা জারি করে। এতে নির্দিষ্ট কোনো বছরের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার বাধ্যবাধকতা দেখা যায়নি। বরং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে নিঃসরণ যত দ্রুত সম্ভব কমিয়ে আনার বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য ইস্পাত খাতকে ঘুরে দাঁড়ানোর জায়গা করে দেয়া। পাশাপাশি খাতটিতে স্বল্প কার্বন নিঃসরণ শিল্পে রূপান্তর করা। এছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যও রয়েছে। শিল্প ধাতুটির উৎপাদন কমিয়ে আনার পর আকাশচুম্বী হয়ে উঠেছে দাম।

বিদায়ী বছরও চীনের অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন কমেছে। ছয় বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো শিল্প ধাতুটির উৎপাদনে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। এর আগে ২০২০ সালে চীন রেকর্ড পরিমাণ অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করেছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চীন কার্বন নিঃসরণ কমাতে গত বছর অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদনে নিয়ন্ত্রণ আরোপের পদক্ষেপ নেয়। পাশাপাশি নজিরবিহীন বিদ্যুৎ সংকট থেকে উত্তরণের লক্ষ্য বাস্তবায়নও এ পদক্ষেপের অন্যতম কারণ।

চীন বিশ্বের শীর্ষ ইস্পাত উৎপাদক দেশ। গত বছর দেশটি ১০ লাখ ৩০ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করে। ২০২০ সালের তুলনায় উৎপাদন ৩ শতাংশ কমেছে। ওই বছর দেশটি ১০ লাখ ৬৫ হাজার টন অপরিশোধিত ইস্পাত উৎপাদন করেছিল।

তথ্য বলছে, কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্য বাস্তবায়নে গত বছরের শুরুতেই খাতসংশ্লিষ্টদের ২০২০ সালের তুলনায় কম ইস্পাত উৎপাদন করতে বলে দেশটির সরকার। তবে অবকাঠামো নির্মাণ ও শিল্প খাতে ঊর্ধ্বমুখী চাহিদার কারণে বছরের প্রথমার্ধে এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। এ সময় ধাতুটির উৎপাদন ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় ১২ শতাংশ বেড়ে যায়। তবে বছরের শেষার্ধে উৎপাদনে লাগাম টেনে ধরতে সক্ষম হন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *