গাড়ির স্টিয়ারিংয়ের একটি উপাদান কমিয়েছে টেসলা
বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার বানানো কিছু গাড়িতে থাকা দুটি ইলেকট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিটের একটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। সাধারণত চীনে তৈরি মডেল থ্রি ও মডেল ওয়াইয়ের গাড়ির স্টিয়ারিং র্যাকে এ বৈদ্যুতিক কন্ট্রোল ইউনিটটি থাকে। বিশ্বব্যাপী চিপ ঘাটতির পাশাপাশি চতুর্থ প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর) বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের চাপের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। খবর রয়টার্স।
এরই মধ্যে চীন, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ইউরোপের অন্যান্য অংশে সরবরাহ করা গাড়িতেও উপাদানটি বাদ দেয়া হয়েছে কিনা সে তথ্য উন্মুক্ত করেনি টেসলা। আবার যেসব গাড়ি যুক্তরাষ্ট্রে বানানো হচ্ছে বা সেখানে পাঠানো হচ্ছে, তাতেও একই ধরনের পরিবর্তন আনা হবে কিনা তাও পরিষ্কার করেনি সংস্থাটি।
প্রতিষ্ঠানটির দুজন কর্মী ও একজন অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদক তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন। এভাবে একটি উপাদান বাদ দেয়ায় নিশ্চিত হওয়া গেছে, ২০২১ সালের শেষ সপ্তাহগুলোয় টেসলা জনসম্মুখে যেসব বিষয় বলেছিল, তার বাইরেও তারা বেশকিছু পরিবর্তন আনতে বাধ্য হয়। বিশ্বজুড়ে চিপের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে এবং এ কারণে গাড়ি থেকে শুরু করে ল্যাপটপ-কম্পিউটার পর্যন্ত উৎপাদন প্রভাবিত হচ্ছে। গাড়ি থেকে এ উপাদানটি বাদ দেয়ার অর্থ দাঁড়ায়, টেসলার যতগুলো কার এখন বাজারে রয়েছে, সেগুলোকে কেবল সফটওয়্যার হালনাগাদ করেই চালকবিহীন যানে পরিবর্তন করতে পারবে না প্রতিষ্ঠানটি।
তবে গ্রাহকদের এ বিষয়ে কোনো নোটিফিকেশন না দেয়ারই সিদ্ধান্ত নেয় টেসলা। কারণ এ উপাদানটিকে একটি অপ্রয়োজনীয় ব্যাকআপ হিসেবে বিবেচনা করা হতো এবং লেভেল ২-এর চালক-সহযোগিতা বৈশিষ্ট্যের জন্যও এটি প্রয়োজনীয় ছিল না।
যেহেতু সেকেন্ডারি ইলেক্ট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল, তাই নিরাপত্তায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলেই নিশ্চিত করেছেন টেসলার কর্মীরা। তাছাড়া এ কন্ট্রোল ইউনিট বাদ দেয়ার কারণে টেসলা অদূর ভবিষ্যতে বেশকিছু টাকা বাঁচাতে পারবে, এমনকি পরিবর্তিত সিস্টেমের কারণে গাড়ি চালাতে কোনো সমস্যাও দেখা দেবে না।
বাদ দেয়া এ অংশটি স্টিয়ারিং সিস্টেমের একটি ইলেক্ট্রনিক কন্ট্রোল ইউনিট, যা স্টিয়ারিংয়ের চাকা নড়াচড়াকে রাস্তায় চাকার নড়াচড়ায় রূপান্তর করে। যখন এত বেশি বৈদ্যুতিক উপাদান ছিল না, তখন গাড়িগুলো এ কাজের জন্য পাম্প, স্টিয়ারিং র্যাক ও পিনিয়নের ওপর নির্ভর করত।
গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বড় কোনো পরিবর্তন আনার আগে এক হাজার ঘণ্টা ব্যয় করে সমীক্ষায়, তাতে লেগে যায় অন্তত চার মাস। কিন্তু টেসলা কয়েক সপ্তাহ মাত্র পরীক্ষা শেষেই এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ফেলে। কারণ এ পরিবর্তনকে তারা বড় কোনো বিষয় হিসেবেই বিবেচনা করছে না।