বার বার আঘাত এসেছে, কবি আর আবৃত্তিকাররা থামেননি: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার

কবিতা, গান, নাটক আর সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রতিবাদের ভাষা বেরিয়ে আসে এবং মানুষ উদ্বুদ্ধ হয়, তা আর কিছুতে হয় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর যখন দেশে রাজনীতি ‘নিষিদ্ধ’ ছিল, তখনও কবি ও আবৃত্তিকাররা প্রতিবাদ করেছেন।

বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধু জাতীয় আবৃত্তি উৎসব ২০২০-২০২২’ এর উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক ২০২০-২২’ বিতরণ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।

তিনি বলেন, “৭৫ এর ১৫ অগাস্টের পর যখন কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করা যাচ্ছিল না, তখন আমাদের কবিতার মধ্য দিয়েই প্রতিবাদের ভাষা বেরিয়ে আসে এবং মানুষ সেখানে উদ্বুদ্ধ হয়।”

‘নীল দর্পণ’ নাটক যেভাবে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনকে চাঙ্গা করেছিল, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “একটি কবিতার শক্তি যে কত বেশি, সেটতো আমরা নিজেরাই জানি।”

তিনি বলেন, বার বার আঘাত এসেছে, কিন্তু বাঙালি কখনো বসে থাকেনি, প্রতিবারই প্রতিবাদ করেছে। “কারণ আমাদের সাহিত্য চর্চাতো বৃথা হয়ে যাবে, এক একজন কবি, শিল্পী, সাহিত্যিক, আবৃত্তিকার, আমাদেরকে যা কিছু দিয়ে গেছেন এগুলো আমাদের সম্পদ।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমি বলব যে এদেশে আন্দোলনের ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি অবদান রয়েছে এদেশের কবিদের এবং আবৃত্তিকারদের। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই সকলের প্রতি।”

কারো নাম উল্লেখ না করে সরকারপ্রধান বলেন, সে সময় অনেকেই যে যে যেভাবে পেরেছেন, লিখেছেন, নাটক করেছেন, সাহিত্য রচনা করেছেন, বই ছাপিয়েছেন, প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে কাউকে কাউকে। কিন্তু থেমে থাকেননি কেউ।

কবিতার অমোঘ শক্তির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা যখন আন্দোলন শুরু করলাম, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, তখনও কত নাটক, কবিতা- আবৃত্তির মধ্য দিয়েই এগিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। সেখানে অনেক বাধা বিপত্তিও এসেছে। তখনকার কবিতা উৎসব অনেক বাধার মধ্য দিয়েই করতে হত।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব কবিতা পাঠের আসর বা উৎসবে তিনি নিজেও যেতেন, কখনো দূরে বসে বা গাড়িতে বসেও তিনি শুনেছেন।

“এই কবিতার মধ্য দিয়ে আমাদের অনেক না বলা কথা বলা হয়। অনেক সংগ্রামে পথ দেখানো হয়। একজন রাজনীতিবিদ বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা দেন। কিন্তু সংস্কৃতি চর্চার আবেদন বক্তৃতার চেয়ে অনেক বেশি।”

তিনি বলেন, “আমি যে কথা বললে একটি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারি, তার থেকে অনেক বেশি উদ্বুদ্ধ হয় মানুষ একটা কবিতা, গান, নাটক বা সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে। যার মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ের কাছে পৌঁছনো যায়।”

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের পাঁচ দিনব্যাপী এই কবিতা উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব জাতীয় আবৃত্তি পদক ২০২০-২২’ বিতরণ করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *