আটা-ময়দার বৈশ্বিক বাণিজ্য রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছার পূর্বাভাস
২০২১-২২ মৌসুমে ময়দার বৈশ্বিক বাণিজ্য অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ বৃদ্ধির পূর্বাভাস মিলেছে। মূলত প্রধান ভোক্তা দেশগুলোয় গম উৎপাদন কমে যাওয়ায় ময়দার ব্যাপক আমদানি চাহিদা তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ই আমদানি বৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রাখবে। ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি) সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, চলতি মৌসুমে বিশ্ববাজারে ১ কোটি ৪৮ লাখ টন ময়দার বাণিজ্য হবে। গত মৌসুমের তুলনায় বাণিজ্য ৯ শতাংশ বাড়বে। যদিও এটি ২০১৬-১৭ মৌসুমে হওয়া রেকর্ড বাণিজ্যের চেয়ে কম।
তথ্য বলছে, ২০১৬-১৭ মৌসুমে ময়দার বৈশ্বিক বাণিজ্য ১ কোটি ৭৬ লাখ টনের রেকর্ড গড়ে। এর পর থেকেই কমতে থাকে বাণিজ্য। ২০১৭-১৮ মৌসুমে ১ কোটি ৬৯ লাখ, ২০১৮-১৯ মৌসুমে ১ কোটি ৬২ লাখ, ২০১৯-২০ মৌসুমে ১ কোটি ৪৬ লাখ ও ২০২০-২১ মৌসুমে ১ কোটি ৩৮ লাখ ময়দার বাণিজ্য হয়। ২০১৩-১৪ মৌসুমের পর গত বছর বাণিজ্যের পরিমাণ সর্বনিম্নে পৌঁছে। মূলত কভিড-১৯ ভাইরাস ও পরিবহন জটিলতার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তবে চলতি মৌসুমের চিত্র সম্পূর্ণই ভিন্ন। এবার বাণিজ্য বৃদ্ধির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা থাকবে ইরাকের। দেশটি এ সময় ১৯-২৭ লাখ টন ময়দা আমদানি করতে পারে। স্থানীয় উৎপাদন আশঙ্কাজনক হারে কমার কারণেই আমদানি বাড়াচ্ছে দেশটি।
বিশ্বের শীর্ষ ময়দা আমদানিকারক দেশ আফগানিস্তান। চলতি মৌসুমে দেশটির আমদানি কমতে পারে। একই সঙ্গে কমতে পারে কাজাখস্তানের আমদানিও। আইজিসির বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমানে দেশ দুটি মানবিক ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা সন্দেহাতীতভাবে দুই দেশের ময়দা বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আইজিসির পূর্বাভাস বলছে, চলতি মৌসুমে আফগানিস্তানের ময়দা আমদানি ২৫ লাখ থেকে কমে ২০ লাখ টনে নামতে পারে। কিউবা তুলনামূলকভাবে ক্ষুদ্র ময়দা আমদানিকারক দেশ। কিন্তু চলতি মৌসুমে দেশটি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি আমদানি করতে পারে।
তুরস্ক বিশ্বের শীর্ষ ময়দা রফতানিকারক। আইজিসি দেশটির ময়দা রফতানি পূর্বাভাস বাড়িয়েছে। সংস্থাটি বলছে, চলতি মৌসুমে তুরস্ক ৪৯ লাখ টন ময়দা রফতানি করতে সক্ষম হবে। গত মৌসুমের তুলনায় রফতানি ১১ শতাংশ বাড়বে। তিন বছরের তুলনায় দেশটির রফতানি রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা। তবে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ রফতানিকারক কাজাখস্তানে এবার গম উৎপাদন কমেছে। এ কারণে দেশটির রফতানি ৮ শতাংশ কমে ২২ লাখ টনে নামতে পারে।