ফারইস্ট ইসলামী লাইফ পছন্দের বিনিয়োগকারীদের শীর্ষে

স্টাফ রিপোর্টার

মূল্যসূচক কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গেল সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৪৬টি প্রতিষ্ঠান। বিপরীতে দাম কমেছে ২১৯টির।

বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দরপতনের মধ্যেই গেল সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে জীবন বিমা কোম্পানি ফারিইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স। গত সপ্তাহে বিনিয়োগকারীদের কাছে পছন্দের শীর্ষে ছিল কোম্পানিটির শেয়ার। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইর দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে এ প্রতিষ্ঠানটি।

গেল সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। টাকার অংকে বেড়েছে ৩০ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৯৮ টাকা ৩০ পয়সা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬৮ টাকা ৩০ পয়সা।

এ বিমা কোম্পানিটির শেয়ারের এমন দাম বাড়াকে অস্বাভাবিক হিসেবে উল্লেখ করেছে ডিএসই কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে তথ্যও প্রকাশ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও কোনো কাজ হয়নি। বরং শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েই চলেছে।

শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি ২০০৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। সম্প্রতি কোম্পানিটি থেকে নজিরবিহীন লুটপাটের তথ্য বেরিয়ে এসেছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে ১০ জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিএসইসি থেকে এমন পদক্ষেপ নেওয়ার ১৫ দিনের মাথায় কোম্পানিটির মূখ্যনির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদ থেকে হেমায়েত উল্লাহকে বহিষ্কার করে বিমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)।

সমস্যার মধ্যে পতিত হওয়া প্রতিষ্ঠানটি সর্বশেষ ২০২০ সালে বিনিয়োগকারীদের কোনো ধরনের লভ্যাংশ দিতে পারেনি। তার আগে ২০১৯ সালে ১০ শতাংশ নগদ, ২০১৮ সালে ২০ শতাংশ নগদ এবং ২০১৭ সালে ২৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।

অন্যদিকে, শেয়ার দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৮০ কোটি ১১ লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।

দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রংপুর ফাউন্ড্রি। গেল সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪২ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। এর পরের স্থানটিতে রয়েছে এএমসিএল প্রাণ। সপ্তাহজুড়ে এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় থাকা বসুন্ধরা পেপারের ৩২ দশমিক ২৩ শতাংশ, আরএকে সিরামিকের ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ, তিতাস গ্যাস ২১ দশমিক ২৭ শতাংশ, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ২০ দশমিক ৩৬ শতাংশ, তাল্লু স্পিনিংয়ের ১৯ দশমিক ৮১ শতাংশ, লাভেলো আইসক্রিমের ১৮ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের ১৭ দশমিক ৮৭ শতাংশ দাম বেড়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *