ডিসেম্বরে ভারতের রফতানি বাণিজ্যে উল্লম্ফন
বিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে রফতানি বাণিজ্যে উল্লম্ফন দেখেছে ভারত। গত মাসে দেশটি ৩ হাজার ৭২৯ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে। রফতানির এ পরিমাণ আগের মাসের চেয়ে ৩৭ শতাংশ বেশি। মাসভিত্তিক রফতানির হিসাবে এটি সর্বোচ্চ। এ উল্লম্ফনের পেছনে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে প্রকৌশল, টেক্সটাইলস ও রাসায়নিক খাত। রফতানি বাড়ার পাশাপাশি গত মাসে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতিও প্রসারিত হয়েছে। খবর দ্য প্রিন্ট।
কেবল রফতানিই নয়। ডিসেম্বরে ভারতের আমদানিও বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। এ মাসে ৫ হাজার ৯২৭ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করেছে ভারত। সরকারি পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, জ্বালানি তেল রফতানি বৃদ্ধিই এর মূল কারণ। ডিসেম্বরে জ্বালানি তেল আমদানি বেড়েছে প্রায় ৬৫ দশমিক ১৭ শতাংশ। অর্থের হিসাবে এটি ১ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার। স্বর্ণ আমদানি ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬৯ কোটি ডলারে। এ সময়ে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৫৭২ কোটি ডলার।
২০২১-২২ অর্থবছরের এপ্রিল থেকে ডিসেম্বরে রফতানি ৪৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজার ৯৭৪ কোটি ডলারে। এ সময়ের মধ্যে আমদানি বেড়েছে ৬৯ দশমিক ২৭ শতাংশ। যার মোট মূল্য ৪৪ হাজার ৩৭১ কোটি ডলার। সব মিলিয়ে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ১৪ হাজার ৩৯৭ কোটি ডলারের।
গত বছরের ডিসেম্বরে প্রকৌশল সামগ্রীর রফতানি ৩৭ দশমিক ২৭ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭০ কোটি ডলারে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে পেট্রোলিয়াম পণ্য, রত্ন ও গহনা, রাসায়নিক দ্রব্য এবং তৈরি পোশাক শিল্প।
চলতি অর্থবছরে ভারতের রফতানির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পিয়ুশ গয়াল। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে ৩০ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। এর অর্থ হলো, আমরা লক্ষ্য অর্জনের সঠিক পথে রয়েছি। এ প্রবৃদ্ধি সন্তোষজনক এবং আমরা আরো প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা করছি।
সেইসঙ্গে মন্ত্রী এটাও উল্লেখ করেন, নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের পঞ্চম ঢেউ উন্নত অর্থনীতির দেশ যেমন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে। পাশাপাশি সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহন ব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এখনই হয়তো সরবরাহ চেইনে সংকটের বিষয়টি চোখে পড়বে না। কিন্তু যেহেতু সংক্রমণের প্রভাব গোটা বিশ্বের ওপরই পড়বে, তাই সংকট সামনে আসতে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। যদিও এখন পর্যন্ত বিশ্বের বড় দেশগুলো লকডাউনের মতো কঠোর ঘোষণা দেয়নি, তার পরও এটা বলা যেতে পারে যে পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মীরা কভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হতে শুরু করলে তাদের কার্যক্রমে অবশ্যই বিঘ্ন সৃষ্টি হবে।
যদিও নভেল করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে রোগী দ্রুত সুস্থ হচ্ছেন, তাই সরবরাহ চেইনে খুব বড় কোনো সমস্যা হবে না বলেও প্রত্যাশা করেন ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী।
পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভারত এ অর্থবছরে ৪০ হাজার কোটি ডলারের পণ্য রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে বলে প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেশনের (এফআইইও) প্রেসিডেন্ট এ শক্তিভেল।