চলতি বছরই পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে বেরিয়ে আসবে জার্মানি
ছয়টি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্ধেক বন্ধ করে দিয়েছে জার্মানি। কয়েক দশক ধরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহারের ইতি টানার পথে রয়েছে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতি। ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরই পারমাণবিক বিদ্যুৎ থেকে বেরিয়ে আসতে চায় জার্মানি। খবর এপি।
২০০২ সালে পর্যায়ক্রমে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তরের ঘোষণা দিয়েছিল জার্মানি। ২০১১ সালে জাপানে ফুকুশিমা বিপর্যয়ের পর দেশটি পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোকে বন্ধ করার জন্য ২০২২ সালকে চূড়ান্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে। যে তিনটি কেন্দ্র বন্ধ করা হচ্ছে, সেগুলো ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝিতে চালু হয়েছিল। এগুলো প্রায় চার দশক ধরে লাখ লাখ জার্মান পরিবারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।
বন্ধ হওয়া কেন্দ্রগুলো হলো হামবুর্গ থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমের ব্রোকডর্ফ, হ্যানোভারের ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে গ্রোহন্ডে ও মিউনিখ থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমের গ্রুন্ড্রেমিঙ্গেন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে জার্মানির কেউ কেউ পারমাণবিক বিদ্যুৎ ব্যবহার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের যুক্তি, বর্তমানে চালু থাকা বিদ্যুৎকেন্দ্র কম কার্বন ডাই-অক্সাইড উৎপাদন করে। এটি গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ কমানোর জন্য জার্মানির লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
২০২২ সালের মধ্যে সব পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লার ব্যবহার বন্ধ করে দিতে চায় জার্মানি। পাশাপাশি ২০৪৫ সালের মধ্যে ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতিটি কার্বন নিঃসরণ শূন্যে নামানোর লক্ষ্য ঘোষণা করেছে।
দেশটির অর্থনীতি ও জলবায়ুমন্ত্রী রবার্ট হ্যাবেক বলেন, ব্যাপকভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বাড়িয়ে এবং বিদ্যুৎ গ্রিডের সম্প্রসারণকে ত্বরান্বিত করে আমরা দেখাতে চাই যে, সত্যিই আমরা পারি।
ফ্রাউনহোফার ইনস্টিটিউট অনুসারে, গত বছর জার্মানিতে উৎপাদিত মোট বিদ্যুতের প্রায় ৪৬ শতাংশ ছিল নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ। এর মধ্যে কয়লা ৫১ শতাংশেরও বেশি এবং পারমাণবিক জ্বালানি ছিল ১৩ শতাংশ।
জার্মানির বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশও পারমাণবিক বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ করেছে কিংবা বন্ধের পরিকল্পনা করেছে। আবার কিছু দেশ এখনো নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণেরও পরিকল্পনা করেছে। এটি পারমাণবিক জ্বালানি নিয়ে ইউরোপের ফাটলের উদ্বেগকে উসকে দিয়েছে।