আন্তর্জাতিক বাজারে ভুট্টার দাম সর্বোচ্চে

স্টাফ রিপোর্টার

আন্তর্জাতিক বাজারে অব্যাহতভাবে বাড়ছে ভুট্টার দাম। গতকাল শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে (সিবিওটি) পণ্যটির দাম বেড়ে কয়েক মাসের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সয়াবিনের দামও। খবর বিজনেস রেকর্ডার।

বিশ্লেষকরা জানান, বৈশ্বিক ভুট্টা উৎপাদনে দক্ষিণ আমেরিকার বড় হিস্যা রয়েছে। বিশেষ করে এ অঞ্চলের দেশ আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল সর্বাধিক ভুট্টা উৎপাদন করে। কিন্তু ভয়াবহ শুষ্ক আবহাওয়া উৎপাদনে বিপর্যয়ের বার্তা দিচ্ছে। এটি বৈশ্বিক সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এমন উদ্বেগের কারণেই পণ্যটির দাম বাড়ছে। তথ্য বলছে, সর্বশেষ কার্যদিবসে সিবিওটিতে ভুট্টার দাম দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি বুশেলের দাম স্থির হয়েছে ৬ ডলার ১৫ সেন্ট।

এদিকে আগামী দশকে ভুট্টার বৈশ্বিক ব্যবহার ২৫ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাস মিলেছে। সম্প্রতি রাবোব্যাংক এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে। ভুট্টা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আরো শক্তিশালী প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি।

ব্যবহার বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় শীর্ষ উৎপাদক দেশগুলো কৃষিপণ্যটির রফতানি বাড়াবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র। কারণ সব দেশেই খাদ্যশস্যটির উৎপাদন বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে ব্রাজিল। আগামী এক দশকে বৈশ্বিক ভুট্টা উৎপাদনে বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে লাতিন আমেরিকার এ দেশ। চলতি বছর ভয়াবহ খরা ও তুষারপাতে ভুট্টাসহ দেশটির সম্পূর্ণ কৃষি খাতই বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। তবে আগামী বছর থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও অনুকূল আবহাওয়ার কারণে ভুট্টা উৎপাদনে দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধির পথে হাঁটছে ব্রাজিল।

রাবোব্যাংকের খাদ্যশস্য ও তেলবীজ বিভাগের ঊর্ধ্বতন বিশ্লেষক মার্সেলা মারিনি বলেন, আগামী দশকে ভুট্টা আবাদের ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানে অবস্থান করবে দক্ষিণ আমেরিকা। উৎপাদনের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনও। আমাদের প্রত্যাশা, ২০৩০ সালের মধ্যে শীর্ষ চার রফতানিকারক দেশে ভুট্টা উৎপাদন ১৫ কোটি ৯০ লাখ টন বেড়ে ৬৮ কোটি ২০ লাখ টনে উন্নীত হবে।

এদিকে গত মাসে ভুট্টার চলতি মৌসুমের বৈশ্বিক উৎপাদন পূর্বাভাস বাড়িয়েছে ইন্টারন্যাশনাল গ্রেইন কাউন্সিল (আইজিসি)। মৌসুম শেষে উৎপাদনের পরিমাণ ধরা হয়েছে ১২১ কোটি ২০ লাখ টন। অক্টোবরে ১২১ কোটি টন উৎপাদনের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছিল। তবে কৃষিপণ্যটির বাণিজ্য পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে ১৭ কোটি ৮০ লাখ থেকে ১৭ কোটি ৭০ লাখ টন নির্ধারণ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *