রোহিঙ্গাদের জন্য বিশ্বব্যাংক থেকে ঋণ নিচ্ছে সরকার

রোহিঙ্গাদের জন্য ২০ কোটি ডলার বা এক হাজার ৬০০ কোটি টাকার ঋণ ও অনুদান দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। দুটি প্রকল্পের একটিতে ঋণ ও অন্যটিতে অনুদান দিচ্ছে সংস্থাটি। এই অর্থ দিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিষ্ঠানিক অবকাঠামো ও শিক্ষার প্রসারে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে সরকার।

সোমবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়। চুক্তি দুটিতে স্বাক্ষর করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মনোয়ার আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিও ফান।

প্রকল্প দুটি হলো- বিশ্বব্যাংকের সহায়তাপুষ্ট সাসটেইনেবল ফরেস্ট অ্যান্ড লাইভলিহুডস (সুফল) প্রকল্প এবং সেকেন্ড রিসিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) প্রকল্প।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সুফল প্রকল্পটি বাস্তবায়নে বিশ্বব্যাংক ঋণ হিসেবে দেবে ১৭ কোটি ডলার। এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানিক শক্তিশালীকরণ, তথ্য পদ্ধতি ও প্রশিক্ষণ দেয়া, গবেষণা, সহযোগিতামূলক বন ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ এবং রক্ষিত বন এলাকা উন্নয়ন, প্রকল্প এলাকার বন-নির্ভর জনগোষ্ঠীর বিকল্প আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি, বন সম্প্রসারণ এবং বনের বাইরে বৃক্ষ রোপণ বাড়ানো এবং প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, পরিবীক্ষণ এবং রিপোর্টিং করা হবে।

৫ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ (রেয়াতকাল) ৩০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এ ঋণের উত্তোলিত অর্থের ওপর এক দশমিক ২৫ শতাংশ সুদ এবং শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে।

অন্যদিকে, রস্ক প্রকল্পটির অতিরিক্ত অর্থায়ন হিসাবে আড়াই কোটি ডলার অনুদান দেবে বিশ্বব্যাংক। এ প্রকল্পের মাধ্যমে কক্সবাজার জেলায় আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শিশুসহ বড়দের শিক্ষার ব্যবস্থা করা হবে। এ ক্ষেত্রে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগ দেয়া হবে। এর মধ্যে পাঠ্যপুস্তক ও উপকরণ সামগ্রির পরিকল্পনা, নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, নারী শিক্ষক নিয়োগ, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য নতুন শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি ও বিদ্যমান শিক্ষাকেন্দ্রকে সহায়তা দেয়া, ক্যাম্পের শিক্ষাকেন্দ্রের জন্য শিক্ষক ও প্রশিক্ষক নিয়োগ এবং নিয়োগকৃত শিক্ষক ও প্রশিক্ষকের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সব অধিদফতরগুলোর ব্যবস্থাপনা, সমন্বয় ও পর্যবেক্ষণ সম্পর্কিত সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলা ও টেকনাফ উপজেলার শিক্ষা অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জন্য এ সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। ডিআরপির শিক্ষার জন্য কিছু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংস্কার সাধন ও পর্যবেক্ষণমূলক কার্যক্রম এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম নেয়া হবে।

চুক্তি শেষে ইআরডি সচিব মনোয়ার আহমেদ বলেন, বিশ্বব্যাংক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। এটি বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সহায়তা। আশা করি, বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা হিসেবে বিশ্বব্যাংক সবসময় আমাদের পাশে থাকবে।

চিমিয়াও ফান বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য বিশ্বব্যাংক অনুদান দিয়ে সহায়তা করছে। এসব সহায়তায় শুধু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যে উপকার পাবেন তা নয়, স্থানীয় জনগোষ্ঠীরাও উপকৃত হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *