বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে ১৭৬০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে নিশান

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত গাড়ি থেকে সরে আসছে অটোমোবাইল শিল্প। পরিবর্তে জোর দেয়া হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে। এরই অংশ হিসেবে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যাটারিতে বিনিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিশান। জাপানি গাড়ি নির্মাতা সংস্থাটি ব্যাটারি উৎপাদনে আগামী পাঁচ বছরে ২ লাখ কোটি ইয়েন (১ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার) বিনিয়োগ করবে।

এপির খবরে বলা হয়েছে, বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন ত্বরান্বিত করতে সাশ্রয়ী ও আরো শক্তিশালী ব্যাটারি উৎপাদন করতে চায় নিশান। এ লক্ষ্যেই বড় অংকের বিনিয়োগ করছে সংস্থাটি। নিশানের প্রধান নির্বাহী মাকাতো উচিদার আশাবাদ, ২০৩০ সালের মধ্যে নিশানের নতুন ১৫টি বৈদ্যুতিক গাড়ির মডেল বাজারে পাওয়া যাবে।

এর আগে গত সপ্তাহে নিশান জানিয়েছিল, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মোট বিক্রীত গাড়ির অর্ধেকই হবে বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড মডেলের। চলতি দশকের শেষ দিকে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি চীনে ৫০ শতাংশ এবং ইউরোপে ৮০ শতাংশে পৌঁছবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।

জার্মানির ফক্সওয়াগনের মতো বৈশ্বিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা বৈদুতিক প্রযুক্তিতে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগের ঘোষণা দেয়ার পর নিশানের পক্ষ থেকেও এমন ঘোষণা এল। যদিও শুরুতে নিশান বৈদ্যুতিক প্রযুক্তিতে অগ্রগামী সংস্থাগুলোর একটি ছিল। তবে টেসলার মতো কোম্পানির তুলনায় জাপানি সংস্থাটির বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির সংখ্যা খুবই কম। এ অবস্থায় বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করে পরিবেশবান্ধব গাড়ির বিক্রিকে ত্বরান্বিত করতে চাইছে নিশান।

গত বছর বৈদ্যুতিক ও হাইব্রিড মডেল মোট গাড়ি বিক্রির প্রায় ১০ শতাংশ ছিল। চীনে এ হার ২ শতাংশ হলেও ইউরোপে ছিল ১০ শতাংশ। পরিবেশগত বিধিনিষেধ আরোপ করায় নিশান উভয় অঞ্চলেই এ পরিসংখ্যান বাড়িয়ে তুলতে চায়। নিশানের সবচেয়ে বড় বাজার চীনে গত বছর ১৪ লাখ ৫০ হাজার গাড়ি বিক্রি হয়েছিল। একই সময়ে নিশান ইউরোপে ৩ লাখ ৯০ হাজার গাড়ি বিক্রি করেছে।

উদিচা বলেন, কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে এবং গ্রাহক চাহিদা মেটাতে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদন প্রচেষ্টা বাড়ানো হচ্ছে। নিশানের কারখানায় নিঃসরণ কমিয়ে আনা হচ্ছে।

নিশান বিদ্যুতায়নের ক্ষেত্রে একটি নতুন এএসএসবি বা অল সলিড স্টেট ব্যাটারি তৈরির ওপর নির্ভর করছে। এ প্রযুক্তিকে বর্তমানে ব্যবহূত ব্যাটারির চেয়ে সাশ্রয়ী এবং বেশি শক্তি উৎপাদনের জন্য একটি যুগান্তকারী হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছে। এ প্রযুক্তির ব্যাটারিগুলো ছোট হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সুতরাং এ ব্যাটারি বৈদ্যুতিক ট্রেন, ট্রাক, ভ্যান ও অন্যান্য ভারী যানবাহনগুলোয় আরো সহজে ব্যবহার করা যাবে। নিশানের মতে, ২০২৮ সালের মধ্যে এএসএসবি ব্যাপক আকারে উৎপাদনে যাবে।

অন্যান্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের মতো সম্প্রতি নিশানও চিপের ঘাটতিতে পড়েছে। বিলাসবহুল ইনফিনিটি মডেল, লিফ বৈদ্যুতিক গাড়ি ও জেড স্পোর্টসকারের নির্মাতা টানা দুই বছরের লোকসান কাটিয়ে চলতি অর্থবছরে মুনাফায় ফেরার পূর্বাভাস দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *