নিম্নমুখী আটা-ময়দার দাম
চাহিদা কমে আসায় নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে আটা ও ময়দার দাম কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিলগেট ও পাইকারি পর্যায়ে এসব পণ্যের দাম প্রতি বস্তায় ৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে পণ্যের চাহিদা কম, এর বিপরীতে সরবরাহ বেশি। এ কারণে বেচাকেনায় মন্দা চলছে। পাশাপাশি গমের বাজার নিম্নমুখী হয়ে পড়ায় পণ্যটির উপজাত আটা-ময়দারও দাম কমেছে।
নিতাইগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে বাজারে ৫০ কেজির প্রতি বস্তা ভালো মানের আটা বেচাকেনা হচ্ছে ১ হাজার ১৫০ টাকায়। ১০ দিন আগেও একই মানের আটা বেচাকেনা হয়েছে ১ হাজার ২০০ টাকায়। সে হিসাবে আটার দাম বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা কমেছে। মানের দিক থেকে কিছুটা নিম্নমানের আটা একই পরিমাণের বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে একই আটা বেচাকেনা হয়েছিল ১ হাজার ১৫০ টাকায়।
বাজারে এখন ভালো মানের ময়দা ৫০ কেজির বস্তায় বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪৮০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১ হাজার ৫২০ টাকা। সে হিসেবে এ ধরনের ময়দার দাম বস্তায় ৪০ টাকা কমেছে।
৭৪ কেজির বস্তায় থাকা অন্য ধরনের ময়দা বর্তমানে বেচাকেনা হচ্ছে ২ হাজার ২৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এটি বেচাকেনা হয় ২ হাজার ৩০০ টাকায়। সে হিসাবে এক সপ্তাহে দাম কমেছে বস্তাপ্রতি ৫০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, মাস দেড়েক আগে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আটা-ময়দার বাজার চাঙ্গা ছিল। ঈদের কিছুদিন পরও বাজার স্থিতিশীল ছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে চাহিদা কমে এলেও সরবরাহ অপরিবর্তিত আছে। আবার গমের দামও কমতে শুরু করেছে। এসব কারণে আটা-ময়দার দাম কমেছে।
তারা জানান, বর্তমানে বাজারে রাশিয়া থেকে আমদানিকৃত লাল গম বেচাকেনা হচ্ছে প্রতি মণ ৮৫০ টাকায়। একই গম ১০-১২ দিন আগে বেচাকেনা হয়ছিল ৯০০ টাকায়।
বাজারে অস্ট্রেলিয়ান গম বেচাকেনা হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯২০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে এর দাম ছিল ৯৪০ থেকে ৯৫০ টাকা। বর্তমানে আমেরিকান গম বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ১ হাজার ১১০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয় ১ হাজার ১৪০ টাকায়।
নারায়ণগঞ্জ আটা-ময়দা ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি শেখ ওয়াজেদ আলী বাবুল জানান, কিছুদিন ধরে বাজারে আটা-ময়দার দাম কমতির দিকে রয়েছে। মূলত গমের দাম কম থাকায় বাজারে এসব পণ্যের দাম কমেছে। গমের দাম কমার মূল কারণ আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির মূল্য হ্রাস। স্থানীয় বাজারে বেচাকেনায় মন্দাভাব আটা-ময়দার দাম কমার আরেকটি কারণ।
ইয়াকুব ফ্লাওয়ার মিলের স্বত্বাধিকারী বেনজির আহমেদ বলেন, বাজারে বেচাকেনা না থাকায় অনেক মিলের শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। আগে যেখানে প্রতিদিন এক থেকে দেড় টন আটা-ময়দা বেচাকেনা হতো। সেখানে এখন এর অর্ধেকও বিক্রি হচ্ছে না। বেচাকেনা এভাবে চলতে থাকলে নিতাইগঞ্জের অনেক মিল মালিককে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে হবে।
শাহীন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী শাহীন হোসেন জানান, এখন প্রতিদিনই আটা-ময়দার দাম কমছে। সর্বশেষ গত আগস্টের প্রথম দিকে আটা-ময়দার দাম কিছুটা বেড়েছিল। তখন বেচাকেনাও ভালো ছিলো। তবে সম্প্রতি এর দাম কমতে শুরু করেছে। দাম কমলে বেচাকেনা বাড়বে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু সরবরাহ বেশি থাকায় বেচাকেনা বাড়েনি।