কর্মসংস্থান তৈরি হবে এক কোটি ১৬ লাখ, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা

স্টাফ রিপোর্ট

করোনা মহামারি সামলে নিয়ে এক কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উচ্চ লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে যাচ্ছে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা। এর মধ্যে ৩৫ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে প্রবাসে। বাকি ৮১ লাখ ৭০ হাজার হবে দেশে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২১ সালে ২১ লাখ ৬০ হাজার, ২০২২ সালে ২২ লাখ ৩০ হাজার, ২০২৩ সালে ২৩ লাখ ৩০ হাজার, ২০২৪ সালে ২৪ লাখ ২০ হাজার এবং ২০২৫ সালে ২৫ লাখ ৩০ হাজার জনের কর্মসংস্থান করা হবে। মঙ্গলবার এনইসি সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এটি উপস্থাপন করা হবে। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গত পাঁচ বছরে (২০১৬-২০) কর্মসংস্থানের লক্ষ্য ছিল এক কোটি ২৯ লাখ। এর মধ্যে দেশে এক কোটি ৯ লাখ, প্রবাসে ২০ লাখ। তবে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে দেশে ৬০ লাখ ও প্রবাসে ৩৫ লাখ মানুষের।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৮.৫১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম অর্থবছরে ৮.২০ শতাংশ, দ্বিতীয় অর্থবছরে ৮.২২ শতাংশ, তৃতীয় অর্থবছরের ৮.২৯ শতাংশ, চতুর্থ অর্থবছরে ৮.৩২ শতাংশ এবং পঞ্চম অর্থবছরে ৮.৫১ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮.২০ শতাংশ। করোনা মহামারির কারণে তা অর্জিত হয়নি। চলতি অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা নেমে আসবে ৪.৮ শতাংশে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় পিছিয়ে পড়া জেলাগুলো থেকে বিদেশে কর্মী পাঠানোর সুযোগ তৈরি করতে ঋণ দেওয়া হবে। উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় প্রত্যেক নাগরিকের অংশগ্রহণ এবং তা থেকে উপকৃত হওয়া এবং দরিদ্র ও দুর্দশাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক কৌশল নেওয়া হয়েছে। ২০৩১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া হবে নতুন পরিকল্পনায়।
এ ব্যাপারে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং’-এর (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি একটি বড় চ্যালেঞ্জ। শুধু কর্মসংস্থান সৃষ্টি নয়, আমাদের রপ্তানিও বহুমুখী করতে হবে।‘
জিডিপির প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা জরিপ করে দেখেছি, অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী এখনো সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি। জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮.৫ শতাংশ বর্তমান প্রেক্ষাপটে কতটা বাস্তবসম্মত, তা আরো যাচাই-বাছাই করতে হবে।‘ পাঁচ বছরে ৩৫ লাখ শ্রমিক বিদেশে পাঠানোর পরিকল্পনাকে বাস্তবসম্মত মন্তব্য করে ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ‘অভিবাসনটা মানসম্মত হতে হবে। পাশাপাশি সরকার প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যে ট্রেনিং সেন্টার খুলেছে, সেখানে যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *