বাড়ছে পোল্ট্রি মুরগির দাম

ঈদের পর সপ্তাহ দুয়েক কিছুটা দাম কমার পর আবার রাজধানীর বাজারগুলোতে পোল্ট্রি মুরগির দাম বাড়ছে। দুদিনের ব্যবধানে পোল্ট্রি মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা। বাজারে চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনাভাইরাসের শুরুতে মুরগির দাম কিছুটা কমেছিল। এরপর রোজার শুরুতে চাহিদা বাড়ায় পোল্ট্রি মুরগির দাম কিছুটা বাড়ে। এরপর ঈদের আগে কয়েক দফা দাম বেড়ে পোল্টির কেজি ২০০ টাকা স্পর্শ করে।

তবে ঈদের পর চাহিদা কমায় আবার পোল্ট্রি মুরগির দাম কমতে শুরু করে। কয়েক দফা দাম কমে ২০০ টাকা থেকে পোল্ট্রির কেজি ১৩০ টাকায় নেমে আসে। তবে চলতি সপ্তাহ থেকে আবার দাম বাড়তে শুরু করেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পোল্ট্রি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত মঙ্গলবারও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা ছিল।

হঠাৎ পোল্ট্রি মুরগির এই দাম বাড়ার তথ্য উঠে এসেছে সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবির) প্রতিবেদনে। টিসিবির তথ্যে, এক সপ্তাহে পোল্ট্রি মুরগির দাম ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। ৯ জুন এই দাম বাড়ে।

পোল্ট্রি মুরগির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী আরিস বলেন, ঈদের আগে পোল্ট্রি মুরগির কেজি ১৯০ টাকা বিক্রি করেছি। চাহিদা না থাকায় সেই মুরগি ঈদের পর ১৪০ টাকায় নেমেছিল। এখন আবার দাম বেড়ে ১৬০ টাকা হয়েছে।

তিনি বলেন, ঈদের পর চাহিদা না থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে পোল্ট্রি মুরগি বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে। বাজারে মুরগির টান বাড়ায় পাইকারিতে দাম বেড়েছে। আজ পাইকারিতে প্রতি কেজি মুরগি ২০ টাকা বেশি দিয়ে কিনতে হয়েছে। এ কারণে আমরা বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।

কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী রাজন বলেন, ঈদের পর মানুষ কয়দিন কমদামে খুব পোল্ট্রি খেয়েছে। তবে কম দামে পোল্ট্রি মুরগি খাওয়ার দিন শেষ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে কেজিতে ২০ টাকার মতো বেড়েছে। আমাদের ধারণা, সামনে পোল্ট্রি মুরগির দাম আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, করোনার শুরুর দিকে দাম কম থাকায় ফার্ম মালিকরা পোল্ট্রি মুরগির উৎপাদন কমিয়ে দেয়। যার প্রভাবে ঈদের আগে অস্বাভাবিক দাম বাড়ে। কম দামের কারণে যারা মুরগির ছোট বাচ্চা বিক্রি করছিলেন না, ঈদের কিছুদিন পর তারা সেই মুরগি বাজারে সাপ্লাই দিয়েছেন। এখন সেই মুরগি ফুরিয়ে আসছে। যার কারণে দাম বাড়তে শুরু করেছে।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, করোনার শুরুর ‍দিকে পোল্ট্রি মুরগির কেজি ১১৫-১২০ টাকা বিক্রি করেছি। সেই মুরগির দাম ঈদের আগে হু হু করে বেড়ে ১৯০ টাকা কেজি হয়। কিন্তু ঈদের পর চাহিদা কমায় পাইকারিতে দাম কমে যায়। ফলে বাড়তি কেনা কিছু মুরগি লোকসান দিয়ে কম দামে বিক্রি করতে হয়েছে। কারণ, পোল্ট্রি মুরগি বেশি দিন রাখা যায় না।

তিনি বলেন, ঈদের আগে যে মুরগি ১৯০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি, তা ঈদের পর ১৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হবে, এটা আমাদের ধারণায় ছিল না। আমরা ধরে নিয়েছিলাম পোল্ট্রি মুরগির দাম আরও বাড়বে। তবে হুট করে বিক্রি অস্বাভাবিক কমে যায়। যে কারণে আমরা কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। এখন আবার পোল্ট্রি মুরগির বিক্রি বাড়ায় দাম বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আমাদের ধারণা, পোল্ট্রির কেজি ২০০ টাকা হয়ে যাবে।

রামপুরার বাসিন্দা মামুন বলেন, গত শুক্রবার পোল্ট্রি মুরগির কেজি ১৪০ টাকা কিনেছি। আজ ১৬০ টাকা কেজি নিয়েছে। ঈদের আগে ১৮০ টাকা কেজি কিনেছিলাম। এখন মনে হচ্ছে পোল্ট্রির দাম আবার সেই দিকে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *