অবরুদ্ধর পর হুবেই প্রদেশে যা করবে সরকার

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে এবার অবরুদ্ধ হলো গোটা হুবেই প্রদেশ। রোববার করোনাভাইরাসের উৎস অঞ্চলটিকে অবরুদ্ধ ঘোষণা করেছে চীন সরকার। ফলে সেখানকার অন্তত ৫ কোটি ৮০ লাখ বাসিন্দা বিশেষ অনুমতি ছাড়া আর বাইরে যেতে পারবেন না, বন্ধ থাকবে সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য। ‘জরুরি প্রয়োজন‘ ছাড়া রাস্তায় গাড়িও বের করতে দেয়া হবে না।

তবে নিরাপত্তার খাতিরে পুলিশের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্স, জরুরি পণ্য পরিবহনসহ অনুমোদিত গাড়িগুলো চলাচল করতে পারবে। যেসব দোকান খোলা, সেখানেও ভিড় কমাতে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যারা জ্বর-জাতীয় অসুখের লক্ষণ নিয়ে ফার্মেসিতে যাচ্ছেন, সেখানে তাদের নাম, ফোন নাম্বার, সর্বশেষ ভ্রমণের তারিখ ও স্থানসহ প্রয়োজনীয় সবধরনের তথ্য লিখে রাখতে বলা হয়েছে।

যেকোনও গ্রাম, সম্প্রদায় বা ভবনে করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে সেগুলো অন্তত ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হবে। কল-কারখানা চালু করতে হলে প্রশাসনের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।

হুবেই সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেখানকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা একটি কঠিন সময় পার করছে। পরিস্থিতি এখনও মারাত্মক। একারণে সংক্রামণের প্রবণতা রোধে যোগাযোগ বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। এর আগে একাধিক শহরে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও পুরো প্রদেশ হিসেবে হুবেই প্রথম অবরুদ্ধ হলো।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় ঝেজিয়াং প্রদেশ কর্তৃপক্ষ সেখানে সবধরনের পাবলিক ভেন্যু বন্ধ করে দিয়েছে, নিষিদ্ধ করা হয়েছে শেষকৃত্য-বিয়েসহ যেকোনও ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন। মানুষ ঘরের বাইরে কতবার যেতে পারবে, সে সংখ্যাও নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে।

ওয়েনঝৌ, হ্যাংঝৌ, নিংবো ও তাইঝৌ শহরগুলোতে সব মিলিয়ে অন্তত তিন কোটি মানুষের বসবাস। সেখানকার বাসিন্দাদের জন্য একধরনের ‘পাসপোর্ট’ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ, যা দেখিয়ে দুইদিনে একবার কেনাকাটা করতে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে।

চীনে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। রোববার এই মৃত্যুর মিছিলে শামিল হয়েছেন আরও ১০০ জন। ফলে দেশটিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৭০ জন। আর আক্রান্ত অন্তত ৭০ হাজার ৫৪৮ জন।

বিশ্বের অন্তত ২৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৭১ হাজার ৩২৬ জন। চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন।

সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *