নবজাতকের ত্বক ঠিক রাখতে যা কতবেন
নবজাতকের ত্বক তুলনামূলক কোমল ও স্পর্শকাতর হয়ে থাকে। এ সময় খুব সতর্কতার সঙ্গে ত্বকের যত্ন নিতে হয়। শিশু জন্মের পর ত্বকে অনেক রকমের সমস্য দেখা দিতে পারে। নবজাতকের তেমন একটি সমস্যা র্যাশ। বিভিন্ন কারণে শিশুর শরীরে এই র্যাশ হতে পারে। নবজাতকের ত্বকে প্রায় সব ধরনের র্যশ বা লালচে দাগ হতে পারে। তবে বেশির ভাগ র্যাশ ততটা ক্ষতিকর নয় এবং এমনিতেই সেরে যায়।
নিচে নবজাতকের র্যাশ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো :
মাসিপিসি
জন্মের দুই থেকে তিন দিন পরই বাচ্চার গায়ে লাল লাল দানা দেখা দেয়। এগুলোকে অনেকটা মশার কামড়ের মতো দেখায়। এদের চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ইরাইথ্রিমা টক্সিকাম। প্রচলিত ভাষায় অনেকে এদের মাসিপিসিও বলেন। কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক দিন বা এক সপ্তাহ পর এগুলো এমনিতেই সেরে যায়। তবে ত্বকের পরিচ্ছন্নতা অবশ্যই বজায় রাখতে হবে।
একজিমা
শিশুর বুকে, বাহুতে, পায়ে, কনুইতে ও হাঁটুর পেছনে লালচে র্যাশ হতে পারে। শুষ্ক, স্পর্শকাতর ত্বকের জন্য এবং অ্যালার্জির কারণে এই সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসা
র্যাশ সাধারণত এমনিতেই সেরে যায়। র্যাশ অতিরিক্ত হলে সংক্রমণের ধরন, মাত্রা এবং শিশুর বয়স অনুসারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছত্রাক প্রতিরোধক জেল, তরল ওষুধ অথবা ক্রিম ব্যবহার করা।
একজিমার চিকিৎসা
শিশুর কাপড়চোপড় হালকা ডিটারজেন্ট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং অন্য কোনো রাসায়নিক দিয়ে পরিষ্কার করা যাবে না। ক্ষারহীন সাবান ব্যবহার করতে হবে। একজিমা না সারলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে।
প্রতিরোধ
• শিশুকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
• শিশুকে স্পর্শ করার বা ধরার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
• শিশু যেন ঘেমে না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।
• বাচ্চাকে পাতলা সুতির কাপড় পরাতে হবে।
• শিশুকে গোসল করানোর সময় ক্ষারহীন সাবান ব্যবহার করতে হবে।
কখন ডাক্তার দেখাবেন :
• র্যাশের সঙ্গে পুঁজ থাকলে
• অনেক বেশি চুলকালে
• অনেক জ্বর থাকলে
• বাচ্চার খাওয়া-দাওয়া কমে গেলে
• র্যাশের সঙ্গে বাচ্চার খিঁচুনি, সর্দি, কাশি বা অন্য সমস্যা বা রোগ থাকলে।
লেখক : রেজিস্ট্রার, শিশু বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ