১০ সন্তান থাকলেও ভিক্ষা করেন জরিনা বেগম

জরিনা বেগম, বয়স সত্তর। দশটি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৭ জন ছেলে ও ৩ জন মেয়ে। ছেলেমেয়ে সবাই এখন কর্মক্ষম। পারিবারিক অবস্থা খুব সচ্ছল না হলেও ভালোই চলে তাদের। কিন্তু জরিনা বেগমকে চলতে হয় ভিক্ষা করে।

নেত্রকোণার কেন্দুয়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের হরিয়ামালা গ্রামের মনছুর আলীর স্ত্রী জরিনা বেগম। স্বামীর মৃত্যু হয়েছে কয়েক বছর আগে। এরপর থেকে ভিক্ষা করেই জীবন চলছে তার।

প্রতিবেশীরা জানান, ছেলেদের সংসার কাজ-কর্ম করে ভালোই চলে। কিন্তু কেউ তার মাকে খাবার দেয় না। গত দুই বছর ধরে জরিনা বেগম ভিক্ষা করে খান। বৃদ্ধ মানুষ, শরীর খারাপ থাকলে ভিক্ষা করতে যেতে পারেন না। তখন না খেয়েই শুয়ে থাকেন। কোনো ছেলে বা ছেলের বউ তাকে খেতে দেয় না। খোঁজ-খবরও নেয় না। বড় ছেলে নূরুল ইসলাম লকুজ মিয়া, সালাম মিয়াসহ অন্যান্য ছেলেরা কেউই তাদের মাকে খেতে দেন না।

সন্তানদের ব্যাপারে জানতে চাইলে জরিনা বেগম বলেন, ‌‌‘আমার কোনো সন্তান নেই। আমার কেউ নেই।’

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাতে একটু গ্রাম চাল থাকলেও তিনি রান্না করেননি। কারণ সকালে খেতে হবে। এ খবর পেয়ে কেন্দুয়ার কল্যাণী ফাউন্ডেশনের সভাপতি কল্যাণী হাসান জরিনা বেগমের বাড়িতে যান। কল্যাণী হাসানকে দেখে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন ওই বৃদ্ধা।

এ সময় কল্যাণী হাসান জানান, ‌আমি ওই বৃদ্ধার দায়িত্ব নিতে চাই। তিনি যদি আমার বাড়িতে যেতে চান তাহলে নিয়ে যাব, না গেলে তার কাপড়-চোপড়সহ ভরণপোষণের দায়িত্ব নেব। এ পর্যন্ত ওই বৃদ্ধা বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা কোনো কিছুই পাননি বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *