বুকে ব্যথা কেন হচ্ছে, কীভাবে বুঝবেন?

বুকে ব্যথার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ফুসফুস, হার্ট বা আঘাতের কারণে এ ব্যথা হতে পারে। বুকে ব্যথা কেন হচ্ছে, কীভাবে বোঝা যাবে?

এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এম এ বাশার। বর্তমানে তিনি বিআরবি হসপিটালে ইন্টারন্যাশনাল মেডিসিন বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : বুকে ব্যথা কেন হচ্ছে, বোঝার কোনো উপায় রয়েছে কি?

উত্তর : বেশ কিছু অসুখ রয়েছে, যার জন্য বুকে ব্যথা হয়। কিন্তু গুরুত্বের সঙ্গে আমাদের বিবেচনা করা দরকার। রোগী ও রোগীর অভিভাবককে এবং চিকিৎসককে তো অবশ্যই। তিনটি বিষয় রয়েছে, যার জন্য আমরা খুবই সতর্ক থাকি, এটা হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে সম্পর্কিত। সেই ব্যথাটা এ রকম হবে, মনে হবে যে বুকটা চেপে আসবে। দম বন্ধ হয়ে আসবে, তার সঙ্গে খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো ঘাম হবে, বমি হবে। রোগী বলবে যে আমি ব্যথা সহ্য করতে পারছি না। ব্যথাটা অনেকটা জায়গাজুড়ে হবে। কার্ডিয়াক ব্যথা কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায় হয় না। এই ব্যথাটা ছড়িয়ে যায়, বিশেষ করে বাঁ হাতের দিকে ছড়িয়ে যায়। এটা পরিশ্রম করলে বাড়বে। বিশ্রাম নিলে কিছুটা কমবে। তবে পরে বিশ্রাম নিলেও কমবে না।

আরেকটি বিষয় হলো, আমরা ভাবি যে গ্যাসট্রিকের ব্যথা। এ জন্য আমরা অ্যান্টাসিড খেয়ে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু অ্যান্টাসিডে কমবে না, এটি আমাদের মনে রাখতে হবে। তাহলে বুঝতে হবে, হার্টের ব্যথাটা এই ধরনের হয়। মনে হয় যে চেপে বসছে এবং আমি মরে যাচ্ছি।

আরেকটি ব্যথা হয়, আমাদের যে প্রধান ধমনি রয়েছে অ্যাওয়াটা, এতেও কিন্তু মারাত্মক ব্যথা হয়। মনে হয়, একটি জিনিস ছিঁড়ে যাচ্ছে।

আর হলো, ম্যাসিভ পালমোনারি অ্যাম্বুলিজম হয়, রোগী যদি দুই থেকে চার দিন পোস্ট অপারেটিভ রেস্ট নেয়, পা একদম নড়াচড়া করল না, এখানে থ্রম্বোসিস হয়, এটি যখন ওপরে আসে তখন সে বুকব্যথা অনুভব করে। বুকে ব্যথার সঙ্গে কিন্তু শ্বাসকষ্ট থাকবে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

আর ফুসফুসে আরেকটি কারণে হয়, সেটি হলো নিউমোথোরাস। সেখানেও আমরা বুকে ব্যথা অনুভব করি।

গ্যাসট্রিকের ব্যথার ক্ষেত্রে বুকে ব্যথায় জ্বালাপোড়া হবে। এসিড যেভাবে পুড়ে সেভাবে। আমাদের আরেকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, হার্টের ব্যথার সঙ্গে ডায়াবেটিস থাকবে। বয়স একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাদের কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক। যাদের পরিবারে হঠাৎ মৃত্যুর ইতিহাস রয়েছে বা যাদের পরিবারে দেখা যায় সবাই হার্টের রোগে ভুগছে, তাদের ক্ষেত্রে আমরা চিন্তা করব, এটি হার্টের অসুখের জন্য হতে পারে।

আর ডায়াবেটিস থাকলে একটি অদ্ভুত ব্যাপার হলো, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা সাধারণত ব্যথা অনুভব করে না।

হার্টের ক্ষেত্রে সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য যত দ্রুত চিকিৎসা করতে পারবে, তত ভালো। চিকিৎসক ও রোগী যদি সতর্ক হয়, তাহলে অনেক জটিলতা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

আর আরেকটি যে বিষয় বলা হলো, মাসকুলটাল পেইন, ত্বক বা হাড় সেখানে আমরা ইতিহাস পেতে পারি যে তার আঘাতজনিত কারণ, অথবা তার জ্বর থাকতে পারে। আমরা যদি নড়াচড়া করি, চাপ দিই, চাপ দিলে ব্যথা অনুভূত হবে। হার্টের ব্যথা কিন্তু চাপ দিলে অনুভূত হবে না।

আর ঘাড়ের যে ব্যথা হয়, সেটি ঘাড়ের পেছন দিকে হবে। সেটা ছড়িয়ে গিয়ে বুকের সামনে আসতে পারে, তবে সেটি হাতেও ছড়িয়ে যাবে।

সুত্রঃ এনটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *