রাখাইনে ৪০ পুলিশ-সেনাকে অপহরণ করেছে বিদ্রোহীরা

টহলরত নৌযানে হামলা চালিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও পুলিশের অন্তত ৪০ সদস্যকে অপহরণ করেছে দেশটির জাতিগত রাখাইন বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা। শনিবার নিরাপত্তা বাহিনীর এই সদস্যরা অপহৃত হয়েছেন বলে দাবি করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের এই রাজ্যে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।

এ ঘটনার পর রাখাইনে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর ঘাঁটি গুড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে হাজার হাজার সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। জাতিগত রাখাইন বৌদ্ধ বিদ্রোহীরা রাজ্যের অধিকতর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে লড়াই করে আসছেআরাকান আর্মির (এএ) বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, সহিংসতা ও বিস্ফোরক ডিভাইসের বিস্ফোরণে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। শুক্রবারও রাখাইনের বুথিডংয়ে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) গাড়িবহরে রিমোট নিয়ন্ত্রিত মাইন বিস্ফোরণে অন্তত দুই পুলিশ সদস্য মারা গেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ্য মিন তুন বলেন, শনিবার সকালের দিকে রাখাইনের রাজধানী সিত্তের উত্তরাঞ্চলে নৌযানে কর্তব্যরত পুলিশ ও সেনাসদস্যদের লক্ষ্য করে নদীর তীর থেকে গুলি ছোড়ে বিদ্রোহীরা।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর ১০ জনের বেশি সদস্য, ৩০ জন পুলিশ ও কারা বিভাগের আরো দুই কর্মী ওই নৌযানে ছিলেন। পরে ৪০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা। বিদ্রোহীদের অবস্থান শনাক্ত করতে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে অভিযান শুরু হয়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকার আশপাশে বিদ্রোহীদের বিশাল ঘাঁটি শনাক্ত করা হয়েছে।

তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযোগের ব্যাপারে তাৎক্ষণিকভাবে আরাকান আর্মির কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। দুই সপ্তাহ আগে রাখাইনে দেশটির একটি খেলোয়াড় দলের বাসে হামলা চালিয়ে এক ডজনের বেশি ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও বেসামরিক নাগরিককে অপহরণ করে সন্দেহভাজন বিদ্রোহীরা। এই হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের অপহরণের ঘটনা ঘটল।

মিয়ানমারের এই রাজ্যে ২০১৭ সালের আগস্টে দেশটির সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানের মুখে ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তারা দীর্ঘ তদন্তের পর বলেছেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান পরিচালনা করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

সূত্র : এএফপি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *