৮ সেপ্টেম্বর থেকে চিঠি পাবেন আ.লীগের বিদ্রোহীরা
উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে যেসব বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করেছিলেন, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে তারা চিঠি পাওয়া শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শোকের মাসে আমরা কিছু কাজ থেকে বিরত থাকি। সেজন্য উপজেলা নির্বাচনের বিদ্রোহীদের বিষয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। উপজেলা নির্বাচনে বিদ্রোহী এবং বিদ্রোহের মদদদাতাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে আগস্ট মাস থাকায় আমরা এটা স্থগিত রেখেছিলাম। এবার এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা বিদ্রোহীদের কারণ দর্শানোর চিঠি দেয়া শুরু করবো।
তিনি বলেন, ৮ তারিখে আগে আমরা সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক যারা বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে আছেন, তাদের নিয়ে বৈঠক করবো। এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থাটা যাতে নিখুঁত উপায়ে এবং এটা সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কার্যকর করা যায় সেই জন্যই আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ করছি। তবে ৮ তারিখ থেকে চিঠি দিতে শুরু করবো। সেটাই আজকে আমাদের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অতীতে জাতীয় নির্বাচনের কারণে তখন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তবে আমরা ডিসিপ্লিন ব্রেক (শৃঙ্খলা ভঙ্গ) হলে এই প্রবণতা চলতেই থাকবে এবং এটা দলের জন্য কোনো ভালো ফল বয়ে আনবে না। সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিসিপ্লিন ভঙ্গ হলে আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদেরকে শোকজ করা হবে, শোকজের জবাব তো তারা দেবে? তারা নিশ্চয়ই সেখানে বলবে কোন কেন্দ্রীয় নেতা তাকে এনকারেজ (উৎসাহিত) করেছে। এটা তো বিচ্ছিন্নভাবে আমি এভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। কোন কেন্দ্রীয় নেতা তাদেরকে এনকারেজ করেছে সেটা তো তাদেরকে শোকজ করার পরে কী কারণে আপনাকে পার্টির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে না, সেটার জবাব দিতে হবে। সেপ্টেম্বরের ১৪ তারিখে আমাদের নেক্সট ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা আছে, সেখানেই আমরা আমাদের পরবর্তী করণীয় সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ের পর আমরা দেশব্যাপী সাংগঠনিক সফরে আমরা যাব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের যে শাখাগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ সেসব জায়গাগুলো নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির মিটিং আছে, সেই মিটিংয়ে এই বিষয়গুলো নিয়ে যেখানে যেখানে ঘাটতি আছে, সমস্যা আছে এসব ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। সম্মেলন সংক্রান্ত বা কোথাও কোনো সাংগঠনিক অচলাবস্থা থাকলে এসব বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত হবে।
অক্টোবরে জাতীয় সম্মেলন হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেটা ওয়ার্কিং কমিটির মিটিংয়ে আলোচনা হতেই পারে। সাংগঠনিক কাযক্রমের আমাদের এজেন্ডার মধ্যে আসতে পারে। আমরা সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুত। আমাদের নেত্রী যখনই সিদ্ধান্ত নেবেন তখনই আমরা প্রস্তুত।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মেজবাহ উদ্দিন সিরাজ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এ কে এম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেল, দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।