পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন-বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
সীসাসহ মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান থাকায় সরকারের মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসটিআইয়ের অনুমোদিত ১৪ কোম্পানির সবগুলোকেই পাস্তুরিত দুধ উৎপাদন, সরবরাহ ও বিক্রিতে পাঁচ সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ রোববার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নিষেধাজ্ঞা দেন।
আদালতের নির্দেশ অনুসারে লাইসেন্সধারী সব ব্র্যান্ডের পাস্তুরিত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্টসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান আছে কি-না সে বিষয়ে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), আইসিডিডিআর’বি এবং বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ল্যাবরেটরির দেওয়া প্রতিবেদন নিয়ে শুনানি শেষে এ আদেশ দেন আদালত।
আদালতে বিএসটিআইর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। এ বিষয়ে রিট আবেদনকারীর পক্ষে ব্যারিস্টার অনীক আর হক, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম শুনানি করেন।
এই ১৪ কোম্পানির মধ্যে মিল্ক ভিটা, ডেইরি ফ্রেশ, ঈগলু, ফার্ম ফ্রেশ, আফতাব মিল্ক, আল্ট্রা মিল্ক, আড়ং, প্রাণ মিল্ক, আয়রণ, পিউরা ও সেফ ব্র্যান্ড অন্যতম।
এর আগে গত ১৪ জুলাই এই ১৪ কোম্পানির পাস্তুরিত দুধের নমুনা পরীক্ষা করে ৪টি ল্যাবকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর গত ২৩ জুলাই ৪টি ল্যাবের মধ্যে ৩টি তাদের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করে। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির প্রতিবেদন এখনও জমা দেওয়া হয়নি।
ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেছিলেন, দুধ পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইতে ৯টি প্যারামিটার রয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে ১৯টি প্যারামিটার আছে। আমি আজ আদালতে বাইরের কয়েকটি দেশের দুধের মান নির্ধারণের উদাহরণ তুলে দেখিয়েছি, তারা দুধ পরীক্ষায় ৩০ ধরনের প্যারামিটার ব্যবহার করেন।
এদিকে দুধের মান পরীক্ষার জন্য বিএসটিআই একটি কমিটি করেছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে গঠিত ওই কমিটি ৭ মাসেও কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। তাই সব বিষয়ে আদালত আমাদের শুনানি নিয়ে পাস্তুরিত দুধের পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধেই ভেজাল ধরা পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।