বাংলাদেশের আশা বাড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

ঐতিহাসিক লর্ডসে খেলছে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড, কিন্তু এ ম্যাচে গভীর মনোযোগ রেখেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ভক্ত-সমর্থকরা। কারণ ইংলিশদের প্রতিটি পরাজয় এখন আশা ও সম্ভাবনা বাড়াবে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে খেলার।

ঠিক এ কাজটিই করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দল। বিখ্যাত লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৬৪ রানে হারিয়ে বাংলাদেশের সেমিতে যাওয়ার সমীকরণ আরেকটু উজ্জ্বল করেছেন অ্যারন ফিঞ্চ-জেসন বেহরেনডর্ফরা। অস্ট্রেলিয়ার করা ২৮৫ রানের জবাবে ইংল্যান্ডের ইনিংস থেমেছে ২২১ রানে।

এ পরাজয়ের ফলে ৭ ম্যাচ শেষে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের ৪ নম্বরেই রয়েছে ইংল্যান্ড। সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে গেছে অস্ট্রেলিয়া। একইসঙ্গে এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালের টিকিটও নিশ্চিত করেছে তারা।

অন্যদিকে ৭ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ অবস্থান করছে ৫ নম্বরে। এখন টাইগারদের সামনে সমীকরণ হলো, যদি ইংল্যান্ড তাদের পরবর্তী দুই ম্যাচে হারে এবং বাংলাদেশ নিজেদের পরের দুই ম্যাচে জেতে- তাহলে চতুর্থ দল হিসেবে সেমির টিকিট পাবে বাংলাদেশই।

আর আজ (মঙ্গলবার) টাইগারদের আশা বাড়িয়ে দেয়া অস্ট্রেলিয়ার এ জয়টি এসেছে মূলত বাঁহাতি পেসার জেসন বেহরেনডর্ফের হাত ধরে। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৫ উইকেট নিয়ে তিনি একাই ধ্বসিয়ে দিয়েছে ইংলিশ ব্যাটিং লাইনআপ। আগুন ঝরিয়েছেন মিচেল স্টার্কও। তার শিকার ৪ উইকেট।

ইংল্যান্ডের পক্ষে ব্যাট হাতে প্রতিরোধ গড়তে পেরেছেন কেবল অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। তার ১১৫ বলে খেলা ৮৯ রানের ইনিংসেই জয়ের আশা দেখছিল স্বাগতিকরা। এছাড়া জনি বেয়ারস্টো (২৭), জস বাটলার (২৫), ক্রিস ওকস (২৬), আদিল রশিদরা (২৫) কেবল হতাশাই বাড়িয়েছেন।

এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই অসিরা তুলেছে ১০০ প্লাস রান। ১২৩ রানের মাথায় ওয়ার্নার আউট হন হাফ সেঞ্চুরি করে। মাঝে উসমান খাজা মাত্র ২৩ রান করে আউট হয়ে গেলেও অপর ওপেনার অ্যারোন ফিঞ্চ সেঞ্চুরি করেই সাজঘরে ফেরেন।

১১৫ বলে সেঞ্চুরি করেন অসি অধিনায়ক। ১১টি বাউন্ডারির সঙ্গে ২টি ছক্কার মার মারেন তিনি। সেঞ্চুরি করার পরের বলেই জোফরা আর্চারের বলে ক্রিস ওকসের হাতে ক্যাচ দেন ফিঞ্চ।

তবে ফিঞ্চ আউট হলেও অস্ট্রেলিয়ার রান বাড়ছিল হু-হু করে। মাত্র ৩৭ ওভারেই ২০০ রান পূর্ণ করে ফেলে তারা। ফিঞ্চ আউট হওয়ার পর মাঠে নেমে ঝড় তোলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। মাত্র ৮ বলে ১২ রান করে মার্ক উডের বলে বাটলারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তিনি।

শুরুতে ইংলিশ বোলারদের কোনো পাত্তাই দিচ্ছিল না দুই অসি ওপেনার। ক্রিস ওকস, জোফরা আর্চার, মার্ক উড, বেন স্টোকস- এই চার পেসারের সঙ্গে আদিল রশিদ এবং মঈন আলি- এই দুই স্পিনারেও কোনো কাজ হচ্ছে না। উইকেটের দেখা মিলছিল না।

শেষ পর্যন্ত সফল হন মঈন আলি। ২৩তম ওভারের চতুর্থ বলে গিয়ে পেলেন উইকেটের দেখা। মঈন আলিকে খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলে দেন ডেভিড ওয়ার্নার। জো রুট সেই ক্যাচটি আর মিস করলেন না। ৬১ বলে ৫৩ রান করে ফিরে গেলেন ওয়ার্নার। ৬টি বাউন্ডারিতে নিজের ইনিংস সাজান তিনি।

২৩ রান করা উসমান খাজাকে বোল্ড করেন বেন স্টোকস। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মার্ক উপের বলটি চেয়েছিলেন উইকেরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দেবেন। কিন্তু পারলেন না। বরং, ব্যাট চুমু দিয়ে বল গিয়ে পড়ে উইকেটরক্ষক বাটলারের গ্লাভসে। ১২ রান করে আউট হন তিনি।

স্টিভেন স্মিথ ক্রিস ওকসের বলে ক্যাচ দেন আর্চারের হাতে। তার আগে তিনি করেন ৩৪ বলে ৩৮ রান। শেষ দিকে অ্যালেক্স ক্যারে কিছুটা মারমুখি হন। ২৭ বল থেকে তিনি করেন ৩৮ রান। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া।

ক্রিস ওকস ২টি, আরচার, মার্ক উড, বেন স্টোকস, মঈন আলি এবং আদিল রশিদ নেন ১টি করে উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *