ইরানের ওপর গুরুতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ট্রাম্প

পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচীতে বাধা দিতে ইরানের ওপর আরো গুরুতর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তেহরান তাদের অবস্থান থেকে সরে না আসা পর্যন্ত অর্থনৈতিক চাপ বজায় রাখা হবে বলে জানান তিনি।

ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, আমরা অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছি। কিছু ক্ষেত্রে খুব দ্রুত তা করা হবে। পরমাণু কর্মসূচী নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তির সীমা লঙ্ঘন সম্পর্কিত ইরানের ঘোষণা আসার পরই এমন কথা জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার সীমা বিষয়ে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোর সঙ্গে ২০১৫ সালে চুক্তি হয়েছিল ইরানের। সে অনুযায়ী কিছু বিষয়ে নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেয়া হয়েছিল এবং ইরানকে তেল রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল।

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র গত বছর ওই চুক্তি প্রত্যাহার করেন এবং ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞাও জারি করেন। এর ফলে ইরান আবারও অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হয় এবং মুদ্রার মান হ্রাস পায়।

ট্রাম্প বলেন, যদি ইরান একটি সমৃদ্ধ জাতি হতে চায়… তবে সেটি আমার কাছে ঠিক আছে। কিন্তু তারা তা কখনোই হতে পারবে না যদি না তারা পাঁচ-ছয় বছর ধরে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে থাকে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক টুইট বার্তায় দেশটির ওপর বাড়তি কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার থেকেই এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

গত বছর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ফলে ইরানের বিশেষ করে জ্বালানী, শিপিং এবং আর্থিক খাতকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিদেশী বিনিয়োগ কমে গেছে এবং তেল রফতানিও বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞার কারণে মার্কিন কোম্পানিগুলো দেশটির সাথে বাণিজ্য থেকে বিরত থাকলেও অন্যান্য দেশের কোম্পানিগুলো সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। এর ফলে বিদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে শিশুদের ব্যবহার্য দ্রব্যে প্রভাব পরেছে।

স্থানীয় মুদ্রার দাম পড়ে যাওয়ায় দেশে উৎপাদিত খাদ্যে প্রভাব পড়েছে, দাম বেড়েছে মাংস বা ডিমের মতো খাদ্য সামগ্রীর।

দুই দেশের মধ্যকার উত্তেজনা যখন ক্রমশই বাড়ছিল ঠিক তখনই মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা এলো।

আকাশসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগে ইরান গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের একটি ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) বলছে, এই ড্রোন ভূপাতিত করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে পরিষ্কার বার্তা পাঠানো হলো যে ইরানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করা যাবে না।

তবে মার্কিন সামরিক কর্তৃপক্ষের দাবি, মানুষবিহীন ওই আকাশযানটি হরমুজ প্রণালীতে আন্তর্জাতিক সীমানাতেই ছিল।তারপর থেকেই দুই দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা শুরু হয়েছে।

আইআরজিসির উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা আমির আলি হাজিজাদেহ বলেন, ৩৫ জনকে বহনকারী একটি সামরিক বিমান সেসময় ওই ড্রোনের খুব কাছেই ছিল, যেটিকে আমরা সহজেই গুলি করতে পারতাম। কিন্তু তা আমরা করিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *