৬০ হাজার টন সার আমদানি হচ্ছে
রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও কাতার থেকে ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির দুটি পৃথক প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এসব সার আমদানিতে ব্যয় হবে ৪৯৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। কমিটির অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। অনুমোদিত ১০টি প্রস্তাবে অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৬৪০ কোটি ৮৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুমোদিত প্রস্তাবগুলো বিস্তারিত উপস্থাপন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সামসুল আরেফিন জানান, রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ফার্টিগ্লোব ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড থেকে সপ্তম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি টন ইউরিয়া সার ৯৫৮ দশমিক ১৭ ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ২৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৫ টাকা। সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ২০২১-২২ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ২ লাখ ১০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ভোলা জেলায় ৪০ মেগাওয়াট গ্যাসভিত্তিক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ বাড়ানো এবং বর্ধিত মেয়াদের জন্য ট্যারিফ প্রস্তাব; ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা উপজেলায় ৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের দরপ্রস্তাব; ‘বাপবিবো’র বৈদ্যুতিক বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও ক্ষমতাবর্ধন (খুলনা বিভাগ)’ প্রকল্পের আওতায় ৩২ হাজার ৪০০টি এসপিসি পোল কেনার প্রস্তাব; পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলায় ৭০ মেগাওয়াট (এসি) ক্ষমতার গ্রিড টাইড সোলার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন প্রস্তাব।
সভায় রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে কাতার থেকে ১৩ লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড (অপশনাল) ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চুক্তি অনুযায়ী সারের দাম নির্ধারণ করে প্রতি টন ৯৫৮ দশমিক ১৭ ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন সার আমদানিতে মোট ব্যয় হবে ২ কোটি ৮৭ লাখ ৪৫ হাজার ১০০ ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ২৪৬ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার ৮৩৫ টাকা। সিসিইএ সভার অনুমোদনক্রমে ২০২১-২২ অর্থবছরে কাতার থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ৩ লাখ ৯০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষর হয়।
সভায় চট্টগ্রাম টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের (টিএসপিসিএল) জন্য ২৫ হাজার টন রক ফসফেট (৭২ শতাংশ বিপিএল মিনিমাম) আমদানির অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ ডলার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ৮১ কোটি ৪৯ লাখ ৩১ হাজার ১২৫ টাকা। টিএসপি সার উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল রক ফসফেট বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে ২৫ হাজার টন রক ফসফেট আমদানির জন্য আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে দুটি দরপত্র জমা পড়ে যা রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসি কর্তৃক সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স দেশ ট্রেডিং করপোরেশন, ঢাকা (প্রধান সরবরাহকারী: মেসার্স জেনট্রেড এফজেডই, ইউএই) এ সার সরবরাহ করবে। আজকের সভায় টেবিলে তিনটি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৭০ হাজার টন সার কেনার দুটি প্রস্তাব এবং সড়ক বিভাগের একটি প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগসংক্রান্ত প্রস্তাব ছিল। এ তিন ক্রয় প্রস্তাবের সঙ্গে আর্থিক সংশ্লেষণের পরিমাণ ৪৯৫ কোটি ১৮ লাখ ৮১৫ টাকা।
