৪ হাজার কোটি ডলার মুনাফা বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের

স্টাফ রিপোর্টার

গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে ৪ হাজার কোটি ডলার মুনাফা করেছে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে, ২০২০ সালের একই প্রান্তিকের চেয়ে যা বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। পুরো বছরে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের মুনাফা হয়েছে ৯ হাজার কোটি ডলার। খবর সিএনএন বিজনেস ও ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

২০২১ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের পরিচালন মুনাফা ৪৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩০ কোটি ডলার। পুরো বছরের পরিচালন মুনাফা ২৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার। অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে ৬৯০ কোটি ডলারের শেয়ার বাই ব্যাক করেছিল কোম্পানিটি।

২০২১ সালে কোম্পানির নিট আয় পূর্ববর্তী বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৯৮০ কোটি ডলার।

শনিবার সকালে আয়-ব্যয়ের উপাত্ত প্রকাশের পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের কাছে বার্ষিক চিঠি পাঠিয়েছে ওয়ারেন বাফেট। এতে বলা হয়, আগামী এপ্রিলের শেষের দিকে ওমাহাতে শেয়ারহোল্ডারদের সরাসরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। তবে ইন-পারসন ওই বৈঠকে অংশ নিতে হলে কভিড-১৯-এর টিকা দেয়া থাকতে হবে।

চিঠিতে বাফেট জানান, গত বছর ব্যবসা সম্প্রসারণের পেছনে প্রধান ভূমিকা রেখেছে চারটি বিনিয়োগ খাত—কোম্পানির ইন্স্যুরেন্স অপারেশনস, বিএনএসএফ রেলওয়ে, বিশাল জ্বালানি ব্যবসা ও অ্যাপলে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার।

শেয়ারের দিক থেকে বার্কশায়ারের সর্বোচ্চ শেয়ার রয়েছে অ্যাপলে। গত বছর মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্টটি থেকে লভ্যাংশসহ ৩৫ শতাংশ রিটার্ন ঘরে তুলেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর নাগাদ অ্যাপলে বার্কশায়ারের শেয়ারমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১২০ কোটি ডলার। ওই শেয়ার ক্রয়ে বার্কশায়ারের ব্যয় করতে হয়েছিল ৩ হাজার ১১০ কোটি ডলার।

চিঠিতে অ্যাপল সিইও টিম কুকের প্রশংসা করতেও ছাড়েননি বাফেট। তিনি তাকে ‘অসাধারণ চৌকস’ সিইও হিসেবে অভিহিত করেন।

ভোক্তা ও শিল্প পণ্য এবং কয়লা রফতানির ওপর ভর করে বিএনএসএফের পরিচালন মুনাফা ১৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০০ কোটি ডলার। কোম্পানিটির মুনাফা প্রায় মহামারীপূর্ব সময়ের কাছাকাছি চলে এসেছে বলে চিঠিতে উল্লেখ করেন বাফেট।

বার্কশায়ার কীভাবে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নির্ভরশীল চিঠিতে তার দিকে ইঙ্গিত দেন বাফেট। যেসব প্রতিষ্ঠানে বার্কশায়ারের শেয়ার রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিরেসেল ব্যাটারিজ, বেঞ্জামিন মুর পেইন্টস, গৃহনির্মাতা প্রতিষ্ঠান ক্লেটন এবং ফ্লোরিং কোম্পানি শ।

গত বছর বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ে ৩৩০ কোটি ডলার আয়কর দেয়ার পাশাপাশি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ প্রাদেশিক ও বৈদেশিক কর প্রদান করেছে বলে জানান বাফেট।

ওয়াল স্ট্রিটেও বার্কশায়ার শেয়ারদের বছরব্যাপী চাঙ্গাভাব দেখা গেছে। বর্তমানে কোম্পানিটির বাজারমূল্য ৭১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। পুরনো শিল্প জায়ান্ট, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, জ্বালানি ও পরিষেবা কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে। বার্কশায়ারের বিনিয়োগের বড় অংশজুড়ে আছে এসব কোম্পানি। চলতি বছরে এ পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ।

শনিবার প্রকাশিত কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে শেয়ার বাই ব্যাক করতে ৮৪০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। বিপরীতে শেয়ার বিক্রি করেছে ১ হাজার ৫৮০ কোটি ডলার।

বাফেটের ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণও শক্তিশালী হয়েছে। ফোর্বসের মতে, বর্তমানে তার নিট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১ হাজার ৫০০ কোটি ডলারে। বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় অষ্টম অবস্থানে রয়েছেন তিনি।

মহামারীর কারণে ২০২০ সালে ভার্চুয়াল এজিএম করেছিল বার্কশায়ার। গত বছর লস অ্যাঞ্জেলেসে অনুষ্ঠিত হয় বৈঠকটি। বাফেটের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার চার্লি মাঙ্গারের বাসায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৯৮ বছর বয়সী মাঙ্গার দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় বসবাস করে আসছেন।

গত বছর এক বৈঠকে বাফেট জানিয়েছিলেন, গ্রেগ আবেল বার্কশায়ার হ্যাথাওয়ের সিইওর দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। তবে নিজে কবে অবসরে যাবেন তা জানাননি ৯২ বছর বয়সী বাফেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *