২ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করবে জিপির

দেশের বৃহত্তম মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীনফোন (জিপি) সর্বোচ্চ আদালতের আদেশ মেনে টাকা পরিশোধের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জিপির নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইয়াসির আজমান বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান জহুরুল হকের সঙ্গে বৈঠকে এমন ইঙ্গিত দেন।

প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি (বিটিআরসির আট হাজার ৪৯৪ কোটি ও এনবিআরের চার হাজার ৮৬ কোটি) টাকা পাওনা হিসেবে দাবি করে গ্রামীণফোন লিমিটেডকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালত দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন।

জিপির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘জিপিকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধের জন্য হাইকোর্ট যে আদেশ দিয়েছেন তা নিয়ে জিপির কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন। তারা কিস্তিতে এ টাকা দিতে চাচ্ছেন। একবারে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধে সুপ্রিম কোর্টের দেয়া আদেশ অনুযায়ী আমি তাদের এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু সুপ্রিম কোর্টের আদেশ, তাই এ টাকা কিস্তিতে নেয়া সম্ভব নয়। আমি তাদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন পুনরায় আদালতের আদেশ নিয়ে একবারে টাকাটা পরিশোধ করে। তবে মনে রাখবেন, যতক্ষণ পর্যন্ত জিপি হাতে অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকাটা পরিশোধ না করছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি বিশ্বাস করছি না।’

সূত্র বলছে, সরকারের সঙ্গে এ দ্বন্দ্বের অবসানে সম্প্রতি গ্রামীনফোন তার কিছু স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করে। স্টেকহোল্ডারদের সবাই সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায় অনুযায়ী সরকারকে দুই হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করে এ ঝামেলা মিটিয়ে ফেলার পরামর্শ দেন।

গত বছরের ২৪ নভেম্বর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ তিন মাসের মধ্যে গ্রামীনফোনকে দুই হাজার কোটি পরিশোধের নির্দেশ দেন। এর আগে অক্টোবরে গ্রামীণফোনের সিংহভাগ শেয়ারের মালিক টেলিনর রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে সালিস দাবি করে।

গত বছরের এপ্রিলে সরকার বকেয়া অর্থ দাবি করলে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে এবং পাওনা দাবির অর্থ আদায়ের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চায়। গত ২৮ আগস্ট ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর বিরুদ্ধে গ্রামীণফোনের পক্ষে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টে আপিল করা হয়।

গত ১৭ অক্টোবর হাইকোর্ট বিষয়টি আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন এবং ওই অর্থ আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে বিটিআরসি আবেদন করে, যা চেম্বার বিচারপতির আদালত হয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আসলে গ্রামীনফোনকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *