২০ ওভারে স্কটল্যান্ডের ২৫২
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডের বোলারদের তুলোধুনো করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এক ইনিংসে ২৭৮ রানের বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল আফগানিস্তান। সোমবার রাতে হুমকির মুখে পড়ে গিয়েছিল আফগানদের সেই রেকর্ড। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে শুরুটা অমন দুর্দান্তই করেছিল স্কটল্যান্ড।
শেষপর্যন্ত আফগানিস্তানের করা ২৭৮ রানের কাছেও যেতে পারেনি স্কটিশরা। তবে বিশ্বের ষষ্ঠ দল হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আড়াইশ’র বেশি রান করার নজির গড়েছে স্কটল্যান্ড। দুই ওপেনারের দুইশ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৫২ রান করতে পেরেছে তারা।
জবাবে কম যায়নি নেদারল্যান্ডসও। অধিনায়ক পিটার সিলারের অপরাজিত ৯৬ রানের ইনিংসে ভর করে তারা থামে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানে। স্কটল্যান্ড পায় ৫৮ রানের বড় জয়। এ দুই দলের সঙ্গে স্বাগতিক আয়ারল্যান্ডকে নিয়ে শুরু হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। যেখানে খেলার কথা ছিলো আইরিশ ও ডাচদের। তবে দ্বিতীয় ম্যাচেই বড় জয় পেলো টুর্নামেন্টের আরেক দল স্কটল্যান্ড।
ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েই যেনো নিজেদের বিপদ ডেকে আনেন ডাচ অধিনায়ক। দুই স্কটিশ ওপেনার কাইল কোয়েৎজার এবং জর্জ মুনসি শুরু থেকেই খেলতে থাকেন আক্রমণাত্মক ঢঙে। জুটির পাশাপাশি দলীয় শতক পূরণ করতে এ দুজন খরচ করেন মাত্র ৮.৫ ওভার।
এরপর আরও বেড়ে যায় ব্যাটের ধার। নয় ওভার শেষে বিনা উইকেটে ১০১ থেকে স্কটিশরা ১৩ ওভারে ওভারেই পৌঁছে যায় ১৮৫ রানে। পল ফন ম্যাকেরেনের করা ১২তম ওভারে আসে ২১ রান। আর ম্যাক্স ও’দাউদের করা ১৩তম ওভারে ৪ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৩২ রান তোলেন মুনসি।
তখনও হাতে ৭ ওভারে থাকায় আফগানিস্তানের ২৭৮ রানের রেকর্ডটি মনে হচ্ছিলো খুব কাছের পথ। কিন্তু ১৪তম ওভারে ফ্রেড ক্লাসেন মাত্র ২ রান খরচ করে খানিক স্লথ করে দেন রানের চাকা। তবে পরের ওভারেই দুই ছক্কা হাঁকিয়ে মাত্র ৪১ বলে সেঞ্চুরি পূরণ করেন মুনসি। ১৫ ওভারে দলীয় এবং জুটিতে ২০০ পূরণ করে মুনসি-কোয়েৎজার জুটি।
মুনসির দেখাদেখি সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন কোয়েৎজারও। কিন্তু ১৬তম ওভারের প্রথম বলে তাকে ৮৯ রানে থামিয়ে দেন শেন স্নেটার। ঠিক ২০০ রানের মাথায়ই আউট হন কোয়েৎজার, পরের বলেই ফিরে যান মাইকেল লিস্ক। প্রথম উইকেটে এটি তৃতীয় ২০০ রানের জুটি। এছাড়া সবমিলিয়েও তৃতীয়বারের মতোই ২০০ রানের জুটির দেখা পায় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি।
কোয়েৎজার থেমে গেলেও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন মুনসি। কিন্তু শেষের ২৮ বলের মধ্যে মাত্র ১২টি খেলার সুযোগ পান তিনি। যে কারণে আরও বড় কিছুর সম্ভাবনা জাগালেও, স্কটল্যান্ডের সংগ্রহ থামে ২৫২ রানে। চার নম্বরে নামা রিচি বেরিংটন খেলার ধারার বিপরীতে ১৬ বল খেলে মাত্র ২২ রান করায় মূলত আরও বড় সংগ্রহ পায়নি স্কটিশরা।
শেষপর্যন্ত ৫৬ বল খেলে ৫ চার ও ১৪ ছক্কার মারে ১২৭ রানে অপরাজিত থাকেন মুনসি। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড এটি। এছাড়া পঞ্চম সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সংগ্রহেও এখন থাকবে মুনসির নাম।
স্কটল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের এত এত রেকর্ডের পর ম্যাচের ফল নিয়ে সংশয় ছিলো বেশ অল্পই। যা আরও কমিয়ে দেয় নেদারল্যান্ডের টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানরা। মাত্র ১৮ রানেই সাজঘরে ফিরে যান তিন ব্যাটসম্যান। তবু লড়াই করতে ছাড় দেয়নি ডাচরা।
অধিনায়ক পিটার সিলার প্রায় একা হাতে লড়ে দলকে নিয়ে ১৯৪ রান পর্যন্ত। শেষপর্যন্ত তিনি নিজে অপরাজিত থাকেন ৯৬ রানের ইনিংস খেলে। মাত্র ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিস করা ইনিংসে ৪৯ বল খেলে ৯ চার ও ৫ ছক্কা হাঁকান তিনি। এছাড়া স্কট এডওয়ার্ডস ১৯ বলে ৩৭ রান করেন।