১৪ মাসের সর্বনিম্নে ভারতে পাম অয়েল আমদানি
ভারতে পাম অয়েল আমদানি ১৪ মাসের সর্বনিম্নে নেমেছে। এপ্রিলে রান্নার তেল হিসেবে বহুল ব্যবহৃত পণ্যটির আমদানি আগের মাসের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। মুম্বাইভিত্তিক সলভেন্ট এক্সট্রাক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (এসইএ) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়।
এসইএর কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, পাম অয়েলের তুলনায় প্রতিদ্বন্দ্বী অন্য ভোজ্যতেলের দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় আমদানিতে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা তৈরি হয়। ক্রেতারা গত মাসে পাম অয়েলের বদলে সূর্যমুখী ও সয়াবিন আমদানিকে প্রাধান্য দিয়েছেন।
ভারত বিশ্বের শীর্ষ ভোজ্যতেল আমদানিকারক। দেশটির আমদানি ব্যাপক হারে কমে যাওয়ার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে পাম অয়েলের দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বর্তমানে এটি সাত মাসের সর্বনিম্ন দামে বেচাকেনা হচ্ছে।
বিষয়টি শীর্ষ উৎপাদক ইন্দোনেশিয়ার জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশটি চলতি বছরের শুরুর দিকে রফতানির ওপর থেকে সব ধরনের বিধিনিষেধ উঠিয়ে নেয়। বছরজুড়ে রফতানি বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু দাম কমে যাওয়ার আশঙ্কা রফতানির জন্য নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
এসইএ জানায়, মার্চে ভারত সব মিলিয়ে ৭ লাখ ২৮ হাজার টন পাম অয়েল আমদানি করেছিল। কিন্তু এপ্রিলে তা কমে ৫ লাখ ১০ হাজার ৯৪ টনে নেমেছে। ২০২২-২৩ বিপণন মৌসুমের (গত বছরের নভেম্বরে শুরু) প্রথম পাঁচ মাসে গড় মাসিক আমদানি দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৭৯ হাজার টনে।
নয়াদিল্লিভিত্তিক এক ডিলার জানান, পাম অয়েলের তুলনায় দাম অনেক কম থাকায় ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের ক্রেতারা এটির বিকল্প হিসেবে বেছে নিয়েছেন সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেলকে। মূলত এ কারণেই গত মাসে আমদানি এত বেশি হারে কমেছে। এপ্রিলে সূর্যমুখী তেল আমদানি এক মাসের ব্যবধানে ৬৮ শতাংশ বেড়েছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৪৯ হাজার ১২২ টনে। অন্যদিকে সয়াবিন তেল আমদানি এক মাসের ব্যবধানে ১ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ৬২ হাজার ৪৫৫ টনে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘চলতি মাসেও আমদানিতে এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। এ মাসে সূর্যমুখী তেলে টনপ্রতি সর্বোচ্চ ৫০ ডলার ছাড় পাওয়া যাবে।’
এপ্রিলে ভারতের মোট উদ্ভিজ্জ তেল আমদানি আগের মাসের তুলনায় ১০ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৫০ হাজার টনে।
ভারত সরকার গত বৃহস্পতিবার জানায়, ৩১ মার্চের আগে যেসব সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেল ভারতে পাঠানোর জন্য জাহাজীকরণ করা হয়, সেগুলোর জন্য কোনো আমদানি শুল্ক দিতে হবে না। জুনের শেষ পর্যন্ত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর থাকবে। এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্তে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে অনেক কার্গো বন্দরে আটকে রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুল্ক প্রত্যাহারের কারণে চলতি ও আগামী মাসে সূর্যমুখী ও সয়াবিন তেল আমদানি ব্যাপক বাড়বে। বিপরীতে কমবে পাম অয়েল আমদানি।