১০ কোটি টন সয়াবিন আমদানির রেকর্ডের পথে চীন
চীনের সয়াবিন আমদানি সর্বকালের সর্বোচ্চে দাঁড়াতে যাচ্ছে। চতুর্থ প্রান্তিকে বিপুল আমদানি এক্ষেত্রে বড় প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসানের মুখে পড়ায় ২০২৪ সালের শুরুর দিকে দেশটির পশুপালন খাতের উদ্যোক্তারা সয়াবিন ক্রয় কমিয়ে দিতে পারে।
ব্রাজিলিয়ান সয়াবিন থেকে উন্নত মানের ভোজ্যতেল ও খাবার তৈরি হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শেষ তিন মাসে রেকর্ড ব্রাজিলিয়ান সয়াবিন সরবরাহের ফলে আকর্ষণীয় মূল্যছাড় পাবেন ক্রেতারা। এতে চীনের আমদানির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনের বড় অংশের গন্তব্য হয়ে উঠেছে চীন। এতে কৃষিপণ্যের মার্কিন বাজার শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডের (সিবিওটি) ওপর চাপ তৈরি হয়েছে। চীন সয়াবিন আমদানির সিংহভাগই নিচ্ছে ব্রাজিলের থেকে। ফলে মুনাফা বঞ্চিত হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইতিমধ্যে সিবিওটিতে সয়াবিনের দাম কমেছে ১৫ শতাংশ।
ডালিয়ানের এক শিল্প সম্মেলনে চীনের জাতীয় শস্য ও ভোজ্যতেল তথ্য কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী ঝাং লিওয়েই বলেছেন, ‘চীনের ফিড শিল্পের টেকসই ও দ্রুত বিকাশ আমাদের সয়াবিন আমদানি বাড়াতে সাহায্য করেছে।’ আন্তর্জাতিক বাজারে বিক্রি হওয়া সয়াবিনের ৬০ শতাংশের আমদানিকারক চীন। দেশটি সয়াবিন মাড়াই করে পশুখাদ্য ও ভোজ্যতেল উৎপাদন করে।
সেপ্টেম্বরে ব্রাজিলের রফতানি মৌসুম শেষ হলে বাজারে আধিপত্য যায় মার্কিন সয়াবিনের দখলে। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে মাঠ থেকে সয়াবিন সংগ্রহ শুরু হয়। তবে এ বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের ক্রয়ের পরিমাণ যথেষ্ট কমেছে। চারটি ব্যবসায়িক সূত্রের পূর্বাভাস মতে, ২০২৩ সালের শেষ তিন মাসে চীন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ২ কোটি ৬০ লাখ টন সয়াবিন আমদানি করবে। আমদানির ৪৫ শতাংশই কিনবে ব্রাজিল থেকে।
সাংহাইভিত্তিক এক গ্লোবাল ট্রেডিং হাউজের ব্যবসায়ীর তথ্যমতে, অক্টোবরের তেলবীজটির আমদানির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৬৫ লাখ টন। নভেম্বরে এক কোটি টন এবং ডিসেম্বরে সামান্য কমে ৯৫ লাখ টন সয়াবিন আমদানি করবে চীন। এর মধ্য দিয়ে ২০২৩ সালে চীন মোট ১০ কোটি ৫০ লাখ টন সয়াবিন আমদানি করবে, যা গত বছরের ৯ কোটি ১১ লাখ টন থেকে ১৫ শতাংশ বেশি।
চীনের কাস্টমস ডাটা বলছে, চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর) তেলবীজটির আমদানির পরিমাণ গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৭৮ লাখ টন।
সিঙ্গাপুরভিত্তিক এক ব্যবসায়ী বলেছেন, ‘এখন যুক্তরাষ্ট্রে সয়াবিনের মৌসুম চলছে। এ কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনের মধ্যে দামের পার্থক্য অনেকটাই কমে এসেছে। তবে উন্নত ভোজ্যতেল ও খাদ্যগুণের কারণে মাড়াইকারীরা এখনো ব্রাজিলিয়ান সয়াবিনই বেশি পছন্দ করেন।’