হিলি স্থলবন্দর দিয়ে বেড়েছে পেঁয়াজ আমদানি
দেশের বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদাকে ঘিরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বাড়িয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। গত রোববার একদিনেই বন্দর দিয়ে ৬৮টি ট্রাকে ২ হাজার ১২ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। এতে দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ বাড়ায় দামও কমতে শুরু করেছে। একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২-৩ টাকা।
হিলি স্থলবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে মূলত দুই ধরনের পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে একটি ইন্দোর জাতের, আরেক নাসিক জাতের পেঁয়াজ। বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ৩৭-৩৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা একদিন আগেও ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে, যা আগে ৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।
হিলি স্থলবন্দর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পেঁয়াজ সরবরাহকারী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘দেশীয় পেঁয়াজের দামে ঊর্ধ্বমুখিতার কারণে দেশের বিভিন্ন মোকামে আমদানীকৃত ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। হিলি স্থলবন্দর থেকে পেঁয়াজ কিনে তা বিভিন্ন মোকামে পাঠাতাম। বেশ কিছুদিন ধরে পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল ছিল। প্রকারভেদে ৩০ টাকার মধ্যেই পেঁয়াজের দাম ছিল। এ কারণে আমাদের যেমন কিনতে সুবিধা হয়েছিল তেমনি মোকাম থেকে সাধারণ মানুষ কম দামে পেঁয়াজ কিনতে পেরেছে। কিন্তু তিন-চারদিন ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে যাওয়ায় দাম ঊর্ধ্বমুখী হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সে তুলনায় মোকামগুলোয় দাম না বাড়ায় আমাদের পেঁয়াজ কিনতে সমস্যা হচ্ছিল। বাড়তি দামের কারণে পুঁজিও বেশি লাগছিল। তবে গত রোববার বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি হওয়ায় দাম কেজিপ্রতি ২-৩ টাকা কমেছে।’
হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ আমদানিকারক তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘দেশের বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাড়তি পেঁয়াজ আমদানি করছিলেন আমদানিকারকরা। এতে দেশের বাজারে পণ্যটির চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেশি থাকায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছিল। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত গরম ও বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজ পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছিলেন আমদানিকারকরা। এতে পেঁয়াজ আমদানি করে লোকসান হওয়ায় তা থেকে বাঁচতে আমদানি কমিয়ে দেন তারা। সেই সঙ্গে ভারতের নাসিক অঞ্চলে বন্যা হওয়ার কারণে সে দেশের বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি দেখা দেয়। এতে ভারতের বাজারেই পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়তির কারণে বাংলাদেশের বাজারেও দাম বাড়ছিল। তবে দেশীয় পেঁয়াজ সরবরাহ কমে আসায় আমদানীকৃত পেঁয়াজের চাহিদা বাড়তে থাকে। এতে বাজারে দাম বাড়ায় সব আমদানিকারক পেঁয়াজের লোডিং বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়েছে। এ কারণে আবারো দাম কমতে শুরু করেছে। আমদানি অব্যাহত থাকলে দাম আরো কমবে।’
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তিন-চারদিন ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি কমে গিয়েছিল। আগে যেখানে বন্দর দিয়ে ৪৫-৫০ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছিল, তা কমে ২০-২৫ ট্রাকে নেমে গিয়েছিল। তবে গত রোববার বন্দর দিয়ে আবারো পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। এদিন বন্দর দিয়ে ৬৮টি ট্রাকে ২ হাজার ১২ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে, যেখানে শনিবার বন্দর দিয়ে ২৪টি ট্রাকে ৭৩০ টন আমদানি হয়েছিল।’